বিজয়ের মাসে দেশে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সম্পূর্ণ নতুন দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ।
আগামী ১ ডিসেম্বর বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে বিমানটি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ২৯ নভেম্বর মালিকানা হস্তান্তর করবে। পরের দিন দুপুরে এটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।
বিজি-২১১২ ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরের পেনফিল্ড এয়ারপোর্ট থেকে টানা সাড়ে ১৫ ঘণ্টা উড়ে ঢাকায় আসবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে ১৯ আগস্ট বিমানের প্রথম ড্রিমলাইনার আকাশবীণা ঢাকায় আসে। নতুন বিমানটি যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫টি।
নতুন এ উড়োজাহাজ যুক্ত হলে বিমানের ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সির সংখ্যা বাড়বে বলে জানান বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এএম মোসাদ্দিক আহমেদ।
তিনি বলেন, ড্রিমলাইনার যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার যুক্ত হওয়ার পর লন্ডন, দাম্মাম ও ব্যাংকক রুটে এ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
তিনি আরও জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা-লন্ডন রুটে সপ্তাহে ৬টি, ঢাকা-দাম্মাম রুটে সপ্তাহে ৪টি এবং ঢাকা-ব্যাংকক রুটে সপ্তাহে ৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।
মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা দিতে বিমান সচেষ্ট। অন্য এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নতুন উড়োজাহাজ বিমানকে সহায়তা করবে।
বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) ইনামুল বারীর বলেন, যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ ও বিমান পরিচালনায় দক্ষতা বৃদ্ধিতে ড্রিমলাইনার নতুন মাত্রা যোগ করবে।
টানা ১৬ ঘণ্টা উড়তে সক্ষম ড্রিমলাইনার চালাতে অন্যান্য বিমানের তুলনায় ২০ শতাংশ কম জ্বালানি লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রসারিত বিমান বহর দিয়ে চলমান রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সহজ হবে এবং নতুন রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে।
ইতিমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ৬টি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, ২টি ৭৩৭-৮০০ এবং ১টি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। বাকি তিনটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার এর মধ্যে দ্বিতীয় বিমানটি যুক্ত হতে চলেছে। চারটি ড্রিমলাইনারসহ সবগুলো উড়োজাহাজের নাম পছন্দ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঘণ্টায় ৬৫০ কিলোমিটার বেগে উড়তে সক্ষম ড্রিমলাইনার বিমানটির ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই)।
ভূমি থেকে ৫৬ ফুট উচ্চতার এই বিমানটির দুটি পাখার আয়তন ১৯৭ ফুট। এর মোট ওজন ১ লাখ ১৭ হাজার ৬১৭ কিলোগ্রাম, যা ২৯টি হাতির সমান! এর ককপিট থেকে টেল (লেজ) পর্যন্ত ২৩ লাখ যন্ত্রাংশ রয়েছে।
ড্রিমলাইনারে আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসের আসনগুলো তৈরি করেছে অ্যাসটেলা। আর ইকোনমি ক্লাসের আসনগুলো হেইকোর বানানো।