অপরিচিত বা স্বল্প পরিচিত কারও সঙ্গে ছবি তোলার ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের জন্য সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও সমাজের বিশিষ্টজনদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। পাশাপাশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি থাকলেই যাচাই-বাছাই না করে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে লেনদেন না করার অনুরোধ জানিয়েছে ডিবি।
সম্প্রতি অতিরিক্ত ডিবি কমিশনার এমন পরামর্শ দেন।
এর আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অতিরিক্ত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (এপিও) পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। এ নিয়ে হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
মো. রাসেল মিয়া নামে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন, দুটি সিম, ১৬টি ভিজিটিং কার্ড (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) ও ১টি সিল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) জব্দ করা হয়।
হারুন অর রশীদ বলেন, মো. রাজ বিন রাসেল তালুকদার নাম দিয়ে একজন ব্যক্তি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ একাধিক মন্ত্রীর ছবি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ছবি ফেসবুকে ব্যবহার করেন। তিনি নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভিজিটিং কার্ডও বানিয়েছিলেন। এই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাকরির প্রলোভন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান, পুলিশে লোক নিয়োগ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বদলি, এলাকার মামলা নিষ্পত্তির তদবির করে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নেন।
গত ১৮ জুলাই একজন ভুক্তভোগী তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাসেলকে রংপুর থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
পুলিশ জানায়, রাসেল রংপুরের পীরগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি মো. রাজ বিন রাসেল তালুকদার নাম দিয়ে ফেসবুকে আইডি খোলেন। তাঁর কাজই ছিল কৌশলে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করা। তিনি ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ফলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা–কর্মীর সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পার্টি অফিসে তোলা ছবিও তিনি নিয়মিত নিজের ফেসবুকে শেয়ার করতেন। এভাবে তিনি রংপুরে নিজেকে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভুয়া ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে তা সবাইকে বিতরণ করেন।
এসব তথ্য মাথায় রেখে ভিআইপিদের সঙ্গে ছবি থাকলেই কারও সঙ্গে সম্পর্ক অথবা লেনদেন করা যাবে না বলে সতর্ক করে দেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার।