উদ্বোধনের এক দিন পরেই ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় চলাচলকারী বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা বাস মালিক সমিতির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের মানুষের দাবির মুখে মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাস চালু করে কর্তৃপক্ষ।
পরদিন (বুধবার) সকাল ৭টায় বোয়ালমারী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশে যাত্রা করে একটি বিআরটিসির বাস। ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে এসে যাত্রী তুলতে গেলে বাসটি আটকে দেয় বাস মালিক সমিতির লোকজন। নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের।
বোয়ালমারী থেকে ঢাকাগামী ওই বাসের যাত্রী ইমরান ফরহাদ বলেন, “সকাল ৮টার কিছু সময় পরে আমাদের বাসটি ভাঙ্গা বাস টার্মিনালে আসার পর বেশ কয়েকজন বাসের চালকের কাছ থেকে চাবি ছিনিয়ে নেয়। তারা বাসের চালক ও হেলপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাসের যাত্রীদের সঙ্গেও অসৌজন্য আচরণ করে।”
বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বাসটি সকাল ৮টায় ভাঙ্গা বাস টার্মিনালের কাছে পৌঁছালে আটকে দেওয়া হয়। এ সময় যাত্রীদের সঙ্গে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বাস থেকে নামিয়ে দেয় মালিক সমিতির নেতারা।”
তিনি আরও বলেন, “যাত্রীদের ভাড়ার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে আমরা ঢাকার দিকে চলে আসতে চাইলেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়। বোয়ালমারীতেও যেতে দেওয়া হয়নি। পরে ড্রাইভার বাস নিয়ে তার বাড়ি মাগুরায় ফিরে যেতে চাইলে তাদের সেখান থেকে ছাড়া হয়।”
এদিকে, বিআরটিসি বাস বন্ধ করে দেওয়ার খবর বোয়ালমারীতে পৌঁছালে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দ্রুতই বাস চলাচলের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে বিআরটিসি কুমিল্লা ডিপোর ম্যানেজার (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “বিআরটিসির বাস বন্ধ করার কোনো এখতিয়ার নেই জেলা বাস মালিক গ্রুপের। পরিবহন সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। সেই হিসেবে বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।”
ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিছুর রহমান বলেন, “বিআরটিসি সারাদেশের ২৩ রুটে যে রুট পারমিট দিয়েছে সেখানে কোনো উপজেলার অনুমতি নেই। তাছাড়া জেলা বাস মালিক গ্রুপ থেকেও অনুমতি নেয়নি। ফলে আমরা বিআরটিসি বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি।”
এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, “বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি এ সমস্যাটির সমাধান হয়ে যাবে।”
পুলিশ সুপার আরও বলেন, “বিআরটিসির পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”