সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হলে ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেছে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায়।
এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারসহ বিচারের দাবিতে একটি মণ্ডপে ঢাকঢোল, বাজনা কিংবা আনন্দ উল্লাসের পরিবর্তে কালো পতাকা উত্তোলন করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সনাতন ধর্মাবলম্বী স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঘটনাটি ঘটছে উপজেলার ২ নং ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়ার কুমারপাড়া সার্বজনীন পূজামণ্ডপে।
জানা গেছে, গত ২৯ জুলাই শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে পিতার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার সময় পথে ধর্ষণসহ হত্যার শিকার হন উপোবালা নামে এক গৃহবধূ।
ওই হত্যার বিচারের দাবিতে ইতোমধ্যে মানবন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন গ্রামবাসীরা। জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ বিচার না পাওয়ায় ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার (১ অক্টোবর) ষষ্ঠীর দিনে সকালে মণ্ডপে কালো পতাকা উত্তোলনসহ অবস্হান নিয়ে ব্যতিক্রম ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।
প্রতিমা ছাড়াই ঘোট পূজার মাধ্যমে দেবীর প্রতি করা হয়েছে ভক্তি প্রকাশ প্রার্থনা।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত কুমার রায় জানান, উপোবালা হত্যাকাণ্ডের বিচার না পাওয়ায় শারদীয় দুর্গাপূজা বর্জন করে কালো পতাকা উত্তোলন করে প্রতিবাদী শোক পালন করছেন তারা। যতদিন ওই হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার হবে না ততদিন তারা ওই মণ্ডপে ধুমধামসহ কোনো ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন না তারা।
শোককে শক্তি রূপে নিতে বাধ্য হয়ে তারা এ কর্মসূচি পালন করছেন বলে জানান তিনি।
নৃপেন্দ্র নাথ রায় নামে আরেক বাসিন্দা জানান, উপোবালা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষাপটে শারদীয় দুর্গাপূজা আনন্দ উল্লাসে উদযাপনের পরিবর্তে বর্জন করছেন তারা। শিশুসহ বড়রা শরীরের চড়াননি নতুন জামাকাপড়।
উল্লাসের পরিবর্তে মণ্ডপের প্রবেশ পথে “সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াও” শীর্ষক সহিংসতা বিরোধী স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
পূজা উদযাপন পরিষদের খানসামা উপজেলা কমিটির সভাপতি ধীমান দাস জানান, উপোবালা হত্যার বিচারের দাবিতে মামলা করেছিল তারা বাবা। মামলাটি পিবিআই’র তদন্তাধীন রয়েছে।
বর্জন কর্মসুচি প্রত্যাহারের লক্ষ্যে বা পরিবারসহ গ্রামবাসীর সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু হত্যার বিচার না পাওয়ায় এবার পূজা পালন হচ্ছে না বলে জানান তিনি।