মানিকগঞ্জে ফ্ল্যাট বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে স্বামী ও সন্তানের পর স্ত্রী সোনিয়া আক্তারও মারা গেছেন। এর আগে, ২৬ অক্টোবর মারা যান স্বামী রাশেদুল ইসলাম (৪৫) এবং ৩১ অক্টোবর মারা যায় তার তিন বছরের ছেলে রিফাত।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনজনই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ফলে আগুনে দগ্ধ পরিবারটির আর কেউই বেঁচে রইলেন না।
আরও পড়ুন- ‘ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর শরীরের আগুন নেভাতে গিয়ে দেখি আমার হাত নেই'
বর্তমানে এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন নিহত রাশেদুলের দোকান কর্মচারী ফারুক হোসেন (২৬)। তবে তার অবস্থা ভালো বলে জানা গেছে। বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন রাশেদুলের বড় ভাই মো. রসুলদী।
পারিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জে পৌরসভাধীন নারাঙ্গাই এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে মাংসের ব্যবসা (কসাই) করেন রাশেদুল ইসলাম। এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকতেন। সোমবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবের রাতে ফ্ল্যাটের দরজা ও জানালা বন্ধ করে একটি কক্ষে রাশেদুল ও দোকানের কর্মচারী ফারুক হোসেন এবং অপর কক্ষে রাশেদুলের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার ও তিন বছরের সন্তান রিফাত ঘুমিয়ে পড়েন। শেষ রাতে রাশেদুল ঘুম থেকে ওঠে দোকানে ফারুককে ডেকে তোলেন। রাশেদুল সিগারেটে আগুন ধরানোর জন্য দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর পরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
আরও পড়ুন- ১৩ দমকলকর্মীকে দেওয়া হবে ‘অগ্নিবীর' স্বীকৃতি
এ সময় ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের দেয়াল ধসে পড়ে এবং দরজা-জানালা ছিটকে আশপাশে যায়। এতে তারা চারজন দগ্ধ হন। তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে গুরুতর দগ্ধ রাশেদুল এবং তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি নেওয়া হয়। দগ্ধ অবস্থায় ফারুকে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাশেদুলের বড় ভাই মো. রসুলদী জানান, গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় তার ছোট ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও ভাতিজাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ অক্টোবর তার ভাই রাশেদুল, ৩১ অক্টোবর ভাতিজা রিফাত ও ৩ নভেম্বর সোনিয়া আক্তার মারা যান।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি আবদুর রউফ সরকার ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “অগ্নিদগ্ধ চারজনের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তান একে একে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।”