২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এ কার্যক্রমের উদ্বোধনের পর ওয়েবসাইটে এবং এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তি সংক্রান্ত লটারির ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এদিকে ফল প্রকাশের পর বিভ্রাট দেখা দিয়েছে খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি তালিকায়।
প্রকাশিত ফলাফলে খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় একই ছাত্রীর নাম এসেছে ৯ বার। অন্যদিকে, যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছে এক ছাত্র।
এটাকে এক ধরনের প্রতারণা বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।
সূত্রমতে, খুলনা বিভাগের ১১টিসহ দেশের ৫৫৫টি সরকারি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় সোমবার বিকাল ৫টায়।
লটারির মাধ্যমে প্রকাশিত ফলাফলে যশোরের মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের তালিকায় দেখা গেছে এক ছাত্রের নাম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬০ জন শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশিত হলেও ৫৫ নম্বর সিরিয়ালে ওই ছাত্রের নাম প্রকাশিত হয়।
ওই ছাত্রের পরিবার জানায়, তারা তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকসুদুর রহমান মাসুদের মাধ্যমে মণিরামপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বালক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে। কিন্তু তার নাম এসেছে মণিরামপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে।
এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কবীর হোসেন পলাশ জানান, কম্পিউটারে ভুল হতে পারে। তিনি তদন্ত করে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এদিকে, প্রকাশিত ফলাফলে খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এক ছাত্রী প্রাতঃশাখায় আটবার এবং দিবা শাখায় একবারসহ মোট ৯ বার চান্স পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ফলাফলে দেখা গেছে, পিতামাতার নাম অভিন্ন হলেও ৯টি রোল নম্বরের বিপরীতে ওই ছাত্রীর তিনটি নাম ব্যবহার করা হয়েছে।এক্ষেত্রে ওই ছাত্রীর দুটি ভিন্ন ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।এছাড়া, সেখানে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে দুটি। একটি নম্বর বন্ধ পাওয়া গেলে অপরটিতে কল করলে রিসিভকারী এই প্রতিবেদককে জানান' তার মেয়ে করোনেশন বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। তবে তার মোবাইল নম্বর কীভাবে ভর্তি ফরমে এলো এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
স্কুল গেটে ফলাফল টানানোর পর বিষয়টি নজরে এলে অভিভাবকরা বলেন, এটা এক ধরনের প্রতারণা। এর ফলে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো।
খুলনার জেলা প্রশাসক ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
খুলনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ফারহানা নাজ বলেন, “এটি একটি বাজে দৃষ্টান্ত হলো। এ বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সরকারি করোনেশন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাকামী মাকসুদা জানান, বিষয়টি মিটিংয়ে জেলা প্রশাসককে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এ ছাড়া এটি তিনি ১৩ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও জানাবেন। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।