বিয়ের কথা বলে মামাতো শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেছিলেন আরিফ হোসেন সিকদার (৫০)। এরপর দীর্ঘ ১৮ বছর পলাতক থাকার পর সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এরই মধ্যে ধর্ষণের শিকার নারী মা হয়েছেন। তার সন্তানের বয়স এখন ১৭ বছর। হঠাৎ করে বাবাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে আদালতে দেখতে এলো সেই সন্তান।
বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে বাবাকে দেখতে বরিশাল আদালতে এসেছিল ছেলেটি। জন্মের পর বাবার সঙ্গে প্রথম দেখা হলেও কথা হয়নি। তবে বাবাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় খারাপ লেগেছে বলে জানিয়েছে এই স্কুলছাত্র।
আদালত সূত্র জানায়, ধর্ষণের মামলার পলাতক আসামি আরিফ হোসেন সিকদারকে ১৮ বছর পর সাভার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক আরিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরিফ মেহেন্দিগঞ্জ পৌর এলাকার অম্বিকাপুর এলাকার বাসিন্দা। পরিচয় গোপন করে এতদিন সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিল আরিফ। সর্বশেষ সাভারে নলকূপ মিস্ত্রির কাজ করতো।
পুলিশ জানায়, বিয়ের কথা বলে মামাতো শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেছিল আরিফ। এতে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হন। এরপর বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করেন। এ অবস্থায় ২০০৫ সালে আরিফকে আসামি করে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ওই নারী। মামলার পর থেকেই পলাতক ছিল আরিফ। এরই মধ্যে ২০০৬ সালে ওই নারী ছেলেসন্তানের মা হন।
গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মেহেন্দিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাভারের নবীনগর জিলানী বাজার এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানে নাম পরিবর্তন করে নলকূপের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গত ১৮ বছরে একবারের জন্যও মেহেন্দিগঞ্জে আসেননি।
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বলেন, “মামলার পর থেকে আরিফের কোনো হদিস ছিল না। ২০০৯ সালের ২৮ অক্টোবর আরিফের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আরিফকে বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠান।”
বেঞ্চ সহকারী আরও বলেন, “বাবাকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে আদালতে দেখতে এসেছিল সেই সন্তান। বাবাকে কাছ থেকে দেখলেও কোনো কথা বলেনি। তবে এতদিন পর বাবার পরিচয় জেনে খুশি হয়েছে। বর্তমানে নানির কাছে থেকে পড়াশোনা করছে সে। তবে তার মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে।”