নামিদামি ব্র্যান্ডের নারিকেল তেল তৈরির উপায়টা খুবই সহজ- তরল প্যারাফিনের সঙ্গে শুধু সুগন্ধি মেশালেই হবে। মাথা ঠাণ্ডা রাখার জন্য বিখ্যাত ভারতীয় নবরত্ন তেল তৈরিতে অবশ্য বাড়তি একটা কাজ করতে হবে। প্যারাফিন নামের রাসায়নিকের মধ্যে শুধু একটু রং মিশিয়ে দিতে হবে, এই যা।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) একটি দল লালবাগে এ উপায়ে তেল বানানো এক কারখানার সন্ধান পেয়েছে। বিএসটিআইয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসিব সরকারের নেতৃত্বে সোমবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে লালবাগের হরনাথ ঘোষ লেনের একটি বাসায় অভিযানে কারখানাটির সন্ধান মেলে।
অভিযানে দেখা যায়, রাসায়নিক মিশ্রিত তরলগুলো একটি বালতি থেকে বোতলে ভরা হচ্ছে। কী ভরা হচ্ছে জানতে চাইলে কারখানার কর্মচারীরা জানান, প্যারাফিনের সঙ্গে সেন্ট (সুগন্ধি) মিশিয়ে তেল তৈরি করা হয়েছে। এটা ক্ষতিকর কি-না জানতে চাইলে তারা বলেন, অবশ্যই ক্ষতিকর।
লালবাগে অভিযান চলাকালে দেখা যায়, সেখানে প্যারাস্যুট বেলি ফুল ও সাধারণ নারিকেল তেল, কিউট হেয়ার ওয়েল, আমলা হেয়ার ওয়েল, ভারতের নবরত্ন ব্র্যান্ডের লাল আয়ুর্বেদিক তেল বোতলজাত করা হচ্ছে।
কারখানার কর্মচারী ইব্রাহীম বলেন, “ইসমাইল নামের একজন নোয়াখালী থেকে ঢাকায় এ ব্যবসা পরিচালনা করে। এ বোতলজাত তেল নোয়াখালী, সিলেট, কক্সবাজারে বাজারজাত করা হয়। আমরা লেবারের কাজ করি এখানে। মহাজন এগুলো করে লাখ লাখ টাকা কামায় আর আমরা বিপদে পড়ি।”
অভিযান প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হাসিব সরকার বলেন, “আবাসিক ভবন ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল মাথায় দেওয়ার তেল সেখানে প্রস্তুত করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করা হতো।”
তিনি আরও বলেন, “এ কাজে নিয়োজিত একজনকে ৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মালিককে আবাসিক ভবনে কারখানা ভাড়া দেওয়ার অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি কারখানার মালামাল জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো নিয়ম অনুযায়ী বিএসটিআই ধ্বংস করবে।”