ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেট ভস্মীভূত হয়ে ভেঙে পড়েছে।মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে আগুন লাগে বঙ্গবাজারে। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল-সংলগ্ন পুকুর,সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল এবং পুলিশ প্লাজার পানির লাইন থেকেই পানি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। এছাড়া রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে পানি নিচ্ছে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার।
ফজলুল হক হলের হাউস টিউটর মুহাম্মদ আবদুর কাদির সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকাল থেকেই পাইপ লাগিয়ে পুকুর থেকে পানি নিচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এলে তাদের গেট খুলে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকটি পাইপ দিয়ে পানি নেওয়া হচ্ছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিট। আগুন নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি সম্মিলিত সাহায্যকারী দল, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ও নৌ বাহিনীর সাহায্যকারী দল কাজ করছে।
আগুন লাগার খবর পেয়ে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। এছাড়া ব্যবসায়ী ও তাদের স্বজনরাও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে ভিড় করার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির অভিযোগ তুলে সংস্থাটির সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে উৎসুক জনতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
আগুনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

আগুনের ভয়াবহতার কারণে বঙ্গ বাজার মার্কেটের আশপাশের এলাকার যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। হাইকোর্ট চত্বর থেকে বঙ্গবাজার হয়ে গুলিস্তান পর্যন্ত সড়কটি বন্ধ রয়েছে। গুলিস্তান থেকে নর্থসাউথ রোডে আসার সড়কটিতেও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাশ দিয়ে হানিফ ফ্লাইওভার ওঠানামার জন্য ফ্লাইওভারটিতে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
মাইকে করে এলাকাবাসীকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে সবাইকে ফায়ার সার্ভিসের কাজে সহায়তার কথা বলা হচ্ছে।
বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ ১০ কোটি মার্কেট, আদর্শ মার্কেট- এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডেকে থাকেন। এই চারটি মার্কেটে প্রায় তিন হাজার দোকান রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এসব মার্কেটের দোকানগুলো টিনশেড ও কাঠের তৈরি হওয়ায় সেগুলোতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।