বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার রমনার বটমূলের সব অনুষ্ঠান বিকেল চারটার মধ্যে শেষ করে সবাইকে রমনা পার্ক ত্যাগ করতে হবে। এছাড়া শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) ব্যাগ নিয়ে রমনার বটমূলে নিয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ বরণ উপলক্ষে রমনা বটমূলে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। রমনা বটমূলে ছায়ানটের সংগীতের মাধ্যমে দিনটির বরণ অনুষ্ঠান শুরু হবে। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে ধ্বংস করার জন্য ২০০১ সালে জঙ্গি গোষ্ঠী এ রমনা বটমূলে বিস্ফোরণ ঘটায়। তাতে অনেক নিরীহ লোকের প্রাণহানি ঘটে। তার পর থেকে ডিএমপি প্রতিবছর রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রসরোবর ও ঢাকার যেসব স্থানে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়, সেসব স্থানে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। এর অংশ হিসেবে রমনার বটমূলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানস্থলে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে “
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, “আমাদের সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট আন্তর্জাতিক মানের। যদি কোথাও বোমা পাওয়া যায়, তাহলে সিটিটিসির (কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম) রোবোটিকস সিস্টেম ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে। পরে রোবটের মাধ্যমে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা যাবে। এর মধ্যেও যদি কোনো দুষ্কৃতকারী ঢুকে যায়, তাহলে ডিএমপির বিশেষায়িত সোয়াট টিম মোকাবিলা করবে। আজ সেই মহড়া তারা দিয়েছে। তাদের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে।' তিনি বলেন, এবারের পয়লা বৈশাখ যেন ঢাকাবাসীসহ সব বাঙালি উৎসবমুখরভাবে পালন করতে পারে, সে জন্য ডিএমপি সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা করেছে। রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রবীন্দ্রসরোবর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক প্রায় ২ হাজার ৭০০ পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার জানান, রমনাকেন্দ্রিক মোট ৯টি গেট থাকবে। এর মধ্যে চারটি গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। বাকি ৫টি গেট দিয়ে প্রবেশ-বাহির হওয়া যাবে। প্রতিটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। প্রত্যেককে তল্লাশি করে রমনায় প্রবেশ করানো হবে, যাতে কোনো দুষ্কৃতকারী যেন সুযোগ নিতে না পারে। প্রতিটি গেটে পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ ও ডিবি পুলিশ তৎপর থাকবে।
তিনি বলেন, “নগরবাসী নিরাপত্তার মধ্যে থেকেই আনন্দ উৎসব করতে পারবেন। পয়লা বৈশাখে উঠতি বয়সী ছেলেরা ভুভুজেলাসহ বিভিন্নভাবে উচ্চ শব্দ করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ ধরনের শব্দ না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি। ব্যাগ নিয়ে কেউ রমনা পার্কে প্রবেশ করতে পারবেন না। প্রত্যকের চেক-ইন করা হবে। তাই বাড়তি কোনো কিছু নিয়ে রমনায় আসবেন না। রমনায় লোকসমাগম বেশি হলে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রমনা পার্ক সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ৪টার মধ্যে সব অনুষ্ঠান শেষ করে রমনা ত্যাগ করতে হবে। চারটার পর আর কাউকে রমনায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।”