বঙ্গোপসাগরের মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্বে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় “মোখার” প্রভাব পড়তে শুরু করবে শনিবার থেকে। এতে দাবদাহ কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, “শুক্রবার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পড়বে না। শনিবার থেকে পড়তে শুরু করবে। আজকে ঢাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি হবে না। তবে আশেপাশে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টি হতে পারে।”
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ–পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় “মোখা” উত্তর-উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শুক্রবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ–পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়- চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
তাপ প্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, সন্দ্বীপ, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও হাতিয়া অঞ্চলসহ ঢাকা, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কমতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “মোখা” এখনো চট্টগ্রাম থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করলেও সাগরের চরিত্র ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে। ছোটো ঢেউগুলো ক্রমে বড় হচ্ছে। স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ইতোমধ্যে অধিকাংশ লাইটার জাহাজ ও সকল মাছ ধরার ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিয়ে আসা হয়েছে। প্রকৃতিতেও রয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। তাপমাত্রা গত কয়েকদিনের তুলনায় কমেছে।
শুক্রবার দুপুরে তাপমাত্রা কিছু সময় ৩৪ ডিগ্রি থাকলেও বিকেলে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সকালে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামে বৃষ্টি শুরু না হলেও সকাল থেকেই গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব বাসসকে বলেছেন, ৪ নম্বর সংকেত জারির পর প্রায় সকল লাইটার জাহাজ সতর্কতা হিসেবে মোহনা হয়ে সদরঘাট, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু ও কালুরঘাট সেতুর কাছাকাছি কর্ণফুলী নদীতে অবস্থান করছে। সংকেত ৭ নম্বরে ওঠে গেলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত মাদার ভেসেলগুলোকে গভীর সাগরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।