উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করতে শুরু করেছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় “মোখা”র অগ্রভাগ। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় সংকেত চলছে। এই অবস্থায় নদী ও সাগরে মাছ ধরা জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। তবে এখনও কিছু জেলে পশুর নদীতে মাছ ধরতে দেখা গেছে।
রবিবার (১৪ মে) বেলা ১২টার দিকে মোংলা উপজেলার কানাইনগর এলাকা সংলগ্ন পশুর নদীতে সরেজমিনে এ চিত্র দেখা যায়। যদিও নদীতে না নামতে উপজেলা প্রশাসন, আবহাওয়া অফিস ও কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হানিফ শেখ নামে এক জেলে বলেন, “ঝড় এখনও শুরু হয়নি, নদীর পানিও শান্ত। তাই মাছ ধরছি। ঝড় শুরু হলে উঠে যাব।”
ওসমান নামের অপর এক জেলে বলেন, “নদীতে মাছ ধরে আমাদের জীবিকা চলে। একদিন মাছ না ধরলে বাজার করতে পারবো না। তাই ঝড়-বন্যা মাথায় নিয়ে আমাদের জীবিকার সংগ্রাম করতে হয়। এটা সহ্য হয়ে গেছে।”
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “সরেজমিনে গিয়ে জেলেদের বলা হলেও তারা কথা শুনছেন না। জেলেদের দাবি, তারা জীবিকার জন্য মাছ ধরছেন। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুনুর রশিদ বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখা মোংলা থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। রবিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি হতে পারে। তবে ঝড়ো বাতাস এবং ভারি বৃষ্টি না। তারপরও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিপদ এড়াতে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।”
কোস্টগার্ড পশ্চিমজোনের (মোংলা সদর দপ্তর) অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তারেক আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন নদী থেকে জেলেদের তীরে আসার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। এরপরও যদি তারা ফিরে না আসে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দীপঙ্কর দাশ বলেন, “১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি ইউনিয়নে ৮৪টি এবং পৌরসভায় ১৯টি। এ ছাড়া সিপিপির ৬৬টি ইউনিটের প্রায় ১ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। পর্যাপ্ত খাবারও মজুদ করে রাখা হয়েছে।”