সম্প্রতি এক বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, “স্কুলে ডাবল শিফটের প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যেসব বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট রয়েছে, সেগুলোও সীমিত এবং একপর্যায়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও শিক্ষার্থীর শিখন নিশ্চিত করতেই সরকার এ পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
২০২১ সালের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালার কয়েকটি বিধি স্পষ্ট করা সংক্রান্ত বৈঠকে নতুন করে শিফট না খোলা এবং শিফট সীমিত করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
তবে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে পরবর্তীতে একটি কর্মশালা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ২৫ জুন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, “বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, তবে এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। কর্মশালার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নতুন পাঠ্যক্রমে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী পড়ানো এবং ডাবল শিফট চালানোও সম্ভব না।”
ভারসাম্যহীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসন ফাঁকা থাকে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী পাবে না আর কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপচে পড়া শিক্ষার্থী থাকবে, তা হতে পারে না। আমরা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আপগ্রেডের চেষ্টা করছি।”
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনিক কাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, সর্বোচ্চ শ্রেণি-শাখার শর্ত পূরণ সাপেক্ষে কেবলমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ে শিফট খোলা যাবে এবং প্রতি শ্রেণিতে অতিরিক্ত দুটি শাখার শিক্ষার্থী থাকলেই শিফট খোলার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি একক শ্রেণিতে ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকবে।
এ আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নির্দেশনা দেন, বিদ্যালয়ে নতুন শিফট খোলা যাবে না। যেসব বিদ্যালয়ে ডাবল শিফট রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ের শিফট সীমিত পর্যায়ে আনতে হবে। পাশাপাশি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন ক্লাস এবং বিভাগ খোলার অনুমতিও দেওয়া হবে না বলে জোর দেন শিক্ষামন্ত্রী।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী স্কুলে ডাবল শিফট খুলতে না দেওয়ার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ভালো উদ্দেশ্য নিয়ে এই উদ্যোগ। শিফট করা সম্ভব হলেও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, শিক্ষকদের সক্ষমতা এবং মনিটরিং কীভাবে হবে। নির্দেশনা দেওয়া সহজ হলেও বাস্তবায়ন করা তো কঠিন।”
তিনি আরও বলেন, মনিটরিংয়ের জায়গায় বরাবরই দেখি দুর্বলতা। শক্তিশালী মনিটরিং করা হলে শিফক করা যতে পারে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২৫ জন, আবার কোনোশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯০ জন শিক্ষার্থী- এ বৈষম্য দূর হওয়া উচিত।”
