যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ তৈরি করে। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রামসহ বন্যাকবলিত মানুষের অসহনীয় জীবনের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেউ মারা গেলে লাশের দাফন জানাজা নিয়ে কী পরিমাণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেটি কল্পনাও করা যায় না। এমন স্মৃতি যাদের আছে তারাই সেটি অনুধাবন করতে পারেন।
শনিবার (১৮ জুন) নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় পানুর গ্রামের মানিক মিয়ার (৩৮) লাশ নিয়ে। গ্রামের কবরস্থানসহ এমন কোনো জায়গা অবশিষ্ট নেই যেখানে বন্যার পানি ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পাশের গ্রামে দাফন করা হবে। কিন্তু মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কীভাবে? এই নিয়ে তৈরি হয় ফের বিপত্তি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষেরা যেমন সমস্যার সমাধানে পথ খুঁজে নেয়। তেমনি মানিক মিয়ার স্বজনেরাও খুঁজে বের করেছে সমাধান।
ভেলায় করে মানিক মিয়ার মরদেহ নেওয়া হয় পাশের গ্রামের রাস্তায়। পরে রবিবার সন্ধ্যায় তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত মানিক মিয়ার গ্রামের কয়েকজন দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোকে বলেন, তাদের গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তাই মানিকের মরদেহ তারা পাশের সমাজ গ্রামের রাস্তায় জানাজা পড়া শেষে দাফনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে সেখানে মরদেহ নিয়ে পৌঁছানোটা কঠিন ছিল। সমস্যা সমাধানে বানানো হয় কলাগাছের ভেলা। সেই ভেলায় মানিকের মরদেহ নেওয়া হয় সমাজ গ্রামের রাস্তায়। পরে রবিবার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইকবাল বলেন, বন্যায় পানুর গ্রাম ডুবে যাওয়ায় মানিক মিয়ার জানাজা ও দাফন নিয়ে বিপত্তি হয়। পরে অন্য গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাব্বির আহমেদ আকুনজি বলেন, উপজেলার ৭৫% এলাকার মানুষ পানিবন্দি।