করোনাভাইরাসের কারণে দুই বছর বন্ধ থাকা ঢাকার ধামরাইয়ের চারশ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা “রথযাত্রার উৎসব” শুরু হয়েছে। শুক্রবার (১ জুলাই) এই উৎসবের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শাসসুল আলম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “ভারতের পার্লামেন্টে সুষমা স্বরাজ কয়েক বছর আগে বলেছেন, বাংলাদেশে গত এক দশকে ৮% হিন্দু বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে ছিল ২%। এখন তা ১০%। এতে কি বোঝা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই বাস করতে পারে। বাংলাদেশ সকলের জন্য এখন নিরাপদ।”
তিনি আরও বলেন, “এটি একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠান। একটা পরম আকাঙ্ক্ষিত অনুষ্ঠান। আজকের এই আয়োজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে আপনারা পালন করতে পারছেন। এই সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই আপনারা নির্বিঘ্নে এই অনুষ্ঠান করতে পারছেন।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বেনজীর আহমদ, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন সরদার, ধামরাই পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব গোলাম কবির মোল্লা প্রমুখ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভক্ত অনুরাগীরা রথে ভক্তি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। অনেকে মেলা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ মেলায় বসা হরেক রকমের খাবারের দোকান থেকে খাবার কিনছেন। রথ খোলার আগে সড়কের ওপর ভিড় দেখা যায় ঘরোয়া দই ও মাঠার দোকানে।
উপজেলার শিমুলিয়া থেকে মঙ্গল ঘোষ তিনটি বড় হাঁড়িতে নিয়ে এসেছেন মুখরোচক এ খাবার। সেখানে দই খাচ্ছিলেন সবুজ হোসেন। তিনি ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “সচরাচর তো এমন ঘরোয়া দই পাওয়া যায় না। দেখেই লোভ লেগে গেলো। তাই খাচ্ছি।”
এ সময় ঘুরতে আসা লক্ষ্মী চক্রবর্তী নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, “শুক্রবার রথে এসে এতো ভালো লাগছে। এটা বলে প্রকাশ করতে পারব না। দুই বছর পর রথ উৎসবে অনেক মানুষ এসেছে। আজ রথ হলো। আট দিন পর রথ টান হবে, মাসব্যাপী চলবে এ মেলা। ঠিক করেছি প্রতিদিন আসব।”
যশোমাধব মন্দিরের সহকারী পুরোহিত উজ্জ্বল গাঙ্গুলী ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “প্রধান অতিথি রথযাত্রা উৎসবের জন্য পুরোহিতের হাতে প্রতীকী রশি প্রদান করা শেষে পাটের রশি ধরে টেনে শ্রী শ্রী যশোমাধবকে তার কথিত শ্বশুরালয় পৌর এলাকার যাত্রাবাড়ী মন্দিরে নিয়ে যান। যাত্রাবাড়ীতে রথটি প্রতি বছরের মতো নয় দিন অবস্থান করবে। সেখানে মাধব ও অন্য বিগ্রহগুলো রথ থেকে নামিয়ে নয় দিন পূজা করা হবে। তারপর উল্টো রথ টেনে আনা হবে আগের জায়গায়।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার শুরু হওয়া পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে ৯ জুলাই।