রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কে একটি মোবাইল শোরুমে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
এর আগে রবিবার (২৪ জুলাই) রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা, ভাটারা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। ডিএমপির গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমানের তত্ত্বাবধানে গোয়েন্দা ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- অনিক হাসান (২২), নাহিদ হাসান (১৯) ও নাদিম মোহাম্মদ সাগর (১৮)।
ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের লেভেল-৪ এর ব্লক-সি’র শেফা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল শোরুমের তালা ভেঙে আইফোনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল চুরি হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় মামলা হয়। আমাদের তদন্তে দেখা যায় তিনজন স্মার্ট চোর দোকানের তালা ভেঙে ব্যাগভর্তি মোবাইল চুরি করে নিয়ে গেল। কিন্তু সেখানে সিকিউরিটি গার্ড ছিল না। প্রথম দুজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তারা যমুনা ফিউচার পার্ক থেকে চুরি করা মোবাইল নিয়ে বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে একটি-দুটি করে বিক্রি করেছেন। এরপর অন্য আরেকজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তারা মোবাইল চুরির পর নামি-দামি মার্কেটের মোবাইল দোকানে বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা ও যমুনা ফিউচার পার্ক মার্কেটে লাগেজ থেকে আনা মোবাইলগুলো সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দেয়। একদিকে তারা সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে অন্যদিকে মোবাইল যারা কিনছে সেসব গ্রাহক মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই মোবাইলগুলো চুরি হওয়ার পরে আইএমইআই নম্বর না থাকার কারণে সেগুলো উদ্ধার সম্ভব হয় না।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, একসময় গুলিস্তানসহ আশপাশের বিভিন্ন মার্কেটে মোবাইল কেনাবেচা হতো। কিন্তু এই চোরদের গ্রেপ্তারের পর জানা গেল তারা নামি-দামি মার্কেটে মোবাইল বিক্রি করে।
সিকিউরিটি গার্ডের সহায়তা ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের মতো মার্কেট থেকে এভাবে মোবাইল চুরি করা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে তারা দিনের বেলায় এই চুরি করেছে। এভাবে চুরির বিষয়টি মার্কেট কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। মার্কেট কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সহায়তা চায় তাহলে সহায়তা দেবো। তবে যারা চোরাই মোবাইল বিক্রি করে বা ভবিষ্যতে করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি সনি এক্সপেরিয়া-৮, তিনটি সনি এক্সপেরিয়া-৫, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এ৩২, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এস৯+, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি-এস১০+, একটি স্যামসাং নোট-৯, একটি স্যামসাং নোট-২০, একটি স্যামসাং নোট-১০+, তিনটি আইফোন-৮, একটি আইফোন ৮+, চারটি আইফোন-এক্স, দুইটি আইফোন এক্সএস, সাতটি আইফোন এক্সআর, একটি আইফোন এক্সএস ম্যাক্স, চারটি আইফোন-১১, তিনটি আইফোন-১১ প্রো, একটি আইফোন-মিনি ও একটি আইফোন-১২ প্রোসহ মোট ৪৫টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এগুলোর বাজারমূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।