Thursday, March 20, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যায় আওয়ামী লীগ নেতার সন্দেহভাজন খুনিরা

পুলিশের ধারণা, ওইদিন উত্তর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীকে গুলি করে হত্যার পর দুই সন্দেহভাজন খুনি গুলশান হয়ে পালাতে চেয়েছিল

আপডেট : ২২ জুন ২০১৮, ০৩:৫২ পিএম

গুলশান-১ নম্বরের গুদারাঘাট চেকপোস্টে গত শুক্রবার (১৫ জুন) তল্লাশির মুখে পড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় দুই যুবক। উত্তর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীকে গুলি করার কিছুক্ষণ পরেই পুলিশকে গুলি করার এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশের ধারণা, ওইদিন উত্তর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ আলীকে গুলি করে হত্যার পর দুই সন্দেহভাজন খুনি গুলশান হয়ে পালাতে চেয়েছিল।

গত শুক্রবার দুপুর ১টা ৫৪ মিনিটে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলির চালানোর এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলের পাশেই রাস্তার ওপরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজে দৃশ্যটি ধরা পড়ে।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি ফরহাদ আলীকে গুলি করে যারা পালিয়েছিল, তারাই গুলশান চেকপোস্টে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে।’

এর আগে উত্তর বাড্ডার বায়তুস সালাম জামে মসজিদের সামনে ফরহাদ আলীকে গুলি করে পালানোর সময় পাশের একটি ভবনে থাকা সিসিটিভি ফুটেজে একই পোশাকে থাকা দুজনকে চিহ্নিত করে পুলিশ। ওই ফুটেজে দেখা গেছে, দুই যুবক দৌড়ে পালাচ্ছে। সাদা টি-শার্ট পরা জুয়েল সামনে দৌড়াচ্ছে। পেছনে তাকে অনুসরণ করে যাচ্ছে লাল টি-শার্ট গায়ে মিরাজুল। জুয়েলের হাতে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যায়।

ঘটনার ১৫ মিনিটেরও কম সময়ের ব্যবধানে গুলশান-১ গুদারাঘাট এলাকায় চেকপোস্টে তল্লাশির মুখোমুখি হয় অস্ত্রধারী জুয়েল ও মিরাজুল। চেকপোস্টের পাশে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১টা ৫৩ মিনিটে গুলশান-১ থেকে আসা একটি সিএনজি অটোরিকশাকে থামার নির্দেশ দেন চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য। এসময় তার সামনে ও পেছনে উপস্থিত ছিলেন এপিবিএন এর আরও দুজন সদস্য। তাদের দুজনকেই রাইফেল হাতে দেখা গেছে। সিএনজি থেকে প্রথমে নেমে আসে মিরাজুল, তার পিছু পিছু জুয়েল।

মিরাজুলকে পাশে রেখে জুয়েলকে তল্লাশি শুরু করেন ওই পুলিশ সদস্য। এসময় মিরাজুল প্রথমে ফুটপাতে কিছুসময় দাঁড়িয়ে থাকলেও পুলিশ সদস্য যখন জুয়েলকে তল্লাশিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তখনই মোবাইল ফোনে কিছু একটা করার ভান করে সামনের দিকে হেঁটে যেতে থাকে মিরাজুল।

হেঁটে চলে যাওয়ার দৃশ্যটি চোখে পড়ার পর সিএনজির পেছনে থাকা এপিবিএন সদস্য মিরাজুলকে ডাক দেন। সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হন সিএনজির সামনে থাকা এপিবিএন সদস্য। কাছে আসার জন্য ডাকা হয় মিরাজুলকে। এতে ফুটপাতের ওপরে থাকা ছাতার নিচে এসে দাঁড়ায় সে। পর মুহূর্তেই কোমর থেকে পিস্তল বের করে তাক করে পুলিশ সদস্যদের দিকে। পিছু হঁটেন পুলিশ সদস্যরা। এতে পালানোর সুযোগ পায় তল্লাশির মুখে থাকা জুয়েল। সে তখন সিএনজিতে লুকিয়ে রাখা পিস্তলটি নিয়ে গুদারাঘাটের দিকে দৌড়ে পালায়। জুয়েল দৌড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরপর দুই রাউন্ড গুলি ছুড়ে মিরাজুল। এতে আরও পেছনে নিরাপদ স্থানে সরে যান পুলিশ সদস্যরা। এসময় পালিয়ে যায় দুই সন্দেহভাজন।

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, "ওই সময় একজন এএসআইয়ের নেতৃত্বে চারজন পুলিশ সদস্য ছিলেন। পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"

ফরহাদ আলী হত্যা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, উত্তর বাড্ডা থেকে পালিয়ে জুয়েল ও মিরাজুল গুলশান পুলিশ প্লাজা, গুলশান-১, নতুন বাজার হয়ে প্রগতি সরণি দিয়ে পালিয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি উত্তর।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর) এর উপ-কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, "আমরা ঘটনার পর থেকেই ছায়া তদন্ত শুরু করেছিলাম। সন্দেহভাজন দুই অস্ত্রধারীকে গ্রেফতারে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।"

   

About

Popular Links

x