লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ট্রেনে কাটা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও এক শিশু।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের সংলগ্ন করলাটারী ঘুন্টিবাজার নামক এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- রহমানপুর ধবসুতি এলাকার রাশেদুজ্জামানের স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) ও তাদের মেয়ে তাসমিরা তাবাসুম তাসিন (৫)। এ ঘটনায় আহত শিশু রাসিনকে (২) পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনের চালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “সকালে ফাঁকা রেলওয়ে লাইনের পাশ দিয়ে এক নারী হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার কোলে এক শিশু ও হাত ধরে আরেক শিশু হাঁটছিল। তারা সামনের দিকে যাচ্ছিলেন। ট্রেনটি কাছাকাছি চলে আসলে সন্তানদের নিয়ে হঠাৎ রেললাইনের ওপরে উঠে যান ওই নারী। আমার মনে হয়েছে, ওই নারী দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যা করতেই এসেছিলেন।”
বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনের পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, “সবকিছু ঠিকঠাকই ট্রেনটি চলছিল। হঠাৎ বুড়িমারী স্টেশনে প্রবেশের আগে চলন্ত ট্রেনের নিচে এক নারী দুই সন্তানকে নিয়ে ঝাঁপ দেন। এর মধ্যে ওই নারী ও তার এক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এক শিশু বেঁচে গেছে।”
এদিকে সুমি আক্তারের প্রতিবেশী ফারুক হোসেন ও হুমায়ুন ইসলাম বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।”
রাশেদুজ্জামান রাশেদের মামা পাটগ্রাম মহিলা কলেজের শিক্ষক আফজালুল হক রিন্টু বলেন, “সুমি কানে কম শুনতো এবং চোখেও সমস্যা রয়েছে। যতটুকু জানি সুমি দুই সন্তানকে নিয়ে বুড়িমারীতে কোনো এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে। প্রকৃত ঘটনা না জেনে বিস্তারিত বলতে পারছি না।”
এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন রাশেদুজ্জামান রাশেদ ও তার মা রাশেদা খাতুন। তাদের ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, “নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”