তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরের কারমাইকেল কলেজের ছাত্র হোস্টেলে হামলা চালিয়েছে একদল বহিরাগত। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জিএল (গোপাল লাল) হোস্টেলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে হল মনিটর আকিমুল ইসলামকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের।
পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাংলা মঞ্চের সামনে মার্কেটিং বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আহসান আহমেদের সঙ্গে বহিরাগত এক তরুণের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জেরে একদল বহিরাগত আহসানের ওপর হামলা করে।
খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে বহিরাগতদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জন বহিরাগত তরুণ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জিএল হোস্টেলে হামলা চালায়। তারা ডাইনিংয়ের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল ভাঙচুর করে।
হোস্টেলের শিক্ষার্থীরা বলেন, হামলাকারীরা একাধিক কক্ষে ভাঙচুর চালায় এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এ সময় হল মনিটর আকিমুল ইসলামসহ অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আকিমুলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হামলার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনসহ কয়েক দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় কলেজ অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন।
খবর পেয়ে তাজহাট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন বলেন, “ক্যাম্পাসে আমার সন্তানদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিএল হোস্টেলের সুপার সিরাজুল ইসলাম মিন্টু বাদী হয়ে তাজহাট মেট্রোপলিটান থানায় মামলা করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পাসে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের জানান, বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। হোস্টেল সুপার সিরাজুল ইসলাম নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।