Friday, March 28, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

আসক: দেশে তিন মাসে ৫৬ সাংবাদিক সহিংসতার শিকার

দেশে তিন মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১২৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জনকে। একই সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৫৩ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে

আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৪:০৬ পিএম

দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটি বলছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৫৬ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, মামলা, হুমকি ও পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধার শিকার হয়েছেন।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো “মানবাধিকার লঙ্ঘনের সংখ্যাগত” প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। দশটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এবং আসকের “নিজস্ব সূত্র” থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “এই সময়ের মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু, জোরপূর্বক অপহরণ ও নিখোঁজ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে মুক্তচিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।”

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন। প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান, সাতক্ষীরায় কর্মরত সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে তুলে নেওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে তাদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।”

বহুল আলোচিত ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সে বিষয়টি তুলে ধরে আসক বলছে, “এ ধরনের মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঙ্কুচিত করবে এবং সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করবে।”

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে আইনমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা নেওয়ার আগে বিশেষ সতর্কতা বজায় রাখার যে অঙ্গীকার করেছিলেন, তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।”

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা থেমে নেই

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছরের প্রথম তিন মাসে পাঁচটি ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের তিনটি বাড়িঘরসহ একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ১৫টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজন নিহত ও কমপক্ষে ৬২ জন আহত হয়েছেন। “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে” কমপক্ষে ১০৩টি বাড়ির ২৫৯টি ঘরে হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। ৩৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “গত তিন মাসে দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ৩ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ জন পুলিশের হাতে ও এবং ২ জন র‌্যাবের হাতে নিহত হন। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে র‌্যাবের গুলিতে আবুল কাসেম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও র‌্যাবের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।”

গত তিন মাসে ১০৫ জন নারী ও পুরুষ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে তথ্য এসেছে আসকের প্রতিবেদনে। তাদের মধ্যে হামলার শিকার হয়েছেন ৪০ জন নারী এবং ৬৫ জন পুরুষ। এর মধ্যে বখাটের হাতে লাঞ্ছিত ২৮ জন, বখাটেদের উৎপাতকে কেন্দ্র করে সংঘাতে আহত হয়েছেন ৬৪ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে যৌন হয়রানির কারণে আটজন নারী আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে, যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের হাতে ২ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১২৪ নারী। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১২ জন নারীকে।

এই সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৫৩ শিশু বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে আসক। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৫২ শিশু এবং একজন ছেলে শিশুকে “ধর্ষণের পর হত্যা করা” হয়েছে। আত্মহত্যা করেছে ২৫ শিশু, বিভিন্ন সময়ে মোট ৪৫ শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৩ শিশুর। এছাড়া “ধর্ষণের” শিকার হয়েছে ৭ ছেলে শিশু এবং “ধর্ষণের চেষ্টা” করা হয়েছে ৩ জন শিশুকে।

সীমান্তে বিএসএফ এর গুলি ও নির্যাতনে এই সময়ে ৫ বাংলাদেশি নাগরিক নিহত এবং আরও ৬ জন আহত হয়েছেন। কারা হেফাজতে মারা গেছেন ২৬ জন, তাদের মধ্যে ১১ জন কয়েদি এবং ১৫ জন হাজতি।

বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের হাতে শিক্ষার্থীদের “নির্যাতন ও নিপীড়নের” কয়েকটি ঘটনাও তুলে ধরেছে আসক।

   

About

Popular Links

x