রাজধানীর মিরপুরের কয়েকটি এলাকায় পোশাক শ্রমিকেরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে মিরপুর-১, ১৩, ১৪, কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়া ও বাংলা কলেজ এলাকা।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই মিরপুর-১ এ আনসার ক্যাম্পের সামনে, বাংলা কলেজ, টেকনিক্যাল এলাকা ও কল্যাণপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় শ্রমিকরা। এ সময় ৩-৪ হাজার শ্রমিক রাস্তায় নামে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে দুপুর ২টার দিকে মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহেন শাহ মাহমুদ আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন।
শাহেন শাহ বলেন, 'শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার পর আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।'
এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল আলম জানান, কারখানাগুলোর মালিকপক্ষ দুপুর ২টায় আলোচনার আশ্বাস দিলে মিরপুরের বাংলা কলেজ এলাকা থেকে বিক্ষোভ সরিয়ে নেয় শ্রমিকরা।
গাজীপুরে ২০ কারখানায় ছুটি
গাজীপুরে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবির আন্দোলনে শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার টার্গেট ফ্যাশন কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-গাজীপুর সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ধাওয়া দিয়ে, লাঠিপেটা করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দিলে সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
এ ছাড়া মোগরখাল এলাকায় বিসিএল কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিলে তাদের সাথে মালিক পক্ষের লোকজনের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
নগরের কোনাবাড়ী বিসিক এলাকায় কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ সৃষ্টি করতে চাইলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
শ্রমিক আন্দোলনের কারণে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া, কোনাবাড়ী, মোগরখাল এলাকাসহ আশপাশের এলাকার অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আশুলিয়ায় শ্রমিক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত ১০
সাভারের আশুলিয়ায় পোশাকশ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুরও করা হয়। আজ শনিবার সকালে আশুলিয়ার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ সংঘর্ষ শুরু হয়ে পৌনে ১২টা পর্যন্ত চলে।
বেলা ১১টার দিকে কমপক্ষে ১৫ পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা রাস্তায় অবস্থান নেয় এবং গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এর এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ সুপার (এসপি) সানা সামিনুর রহমান ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
গত ৬ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাভার, গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নতুন বেতন কাঠামোতে অসামঞ্জস্যের অভিযোগ এনে প্রতিবাদ জানিয়েছে। শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে গত কয়েকদিন ধরেই সরকার, গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের আলোচনা চলছে। তবে তারা কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।
শ্রমিকদের যা দাবি
নতুন বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ এনে শুরু হয় পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ। তাদের দাবি অনুযায়ী বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে মালিকপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করছে বলে জানায় শ্রমিক নেতারা। এর জের ধরে গত দুই মাস ধরেই তাদের মধ্যে অসন্তোষ চলছে।