চাকরির পরীক্ষায় ২৪-২৫ বছর বয়সের প্রার্থীরা ভালো করে আর ৩০ বছর বয়সীরা বেশিরভাগ ফেল করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সোমবার (১৫ মে) বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, সরকারি চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো হবে কি-না?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “বয়সসীমা বাড়ানো নয়, যারা কোভিডের কারণে চাকরির পরীক্ষা দিতে পারেনি, তাদের ক্ষেত্রে শিথিল করা হয়েছে। তাদের অনেকে চাকরি পেয়েও গেছেন।”
তিনি বলেন, “বয়সসীমা নিয়ে একটা কথা বলি, এটা নিয়ে আন্দোলন হলো। পরে একটা হিসাব নিলাম। ২৪-২৫ বছর বয়সের ছেলেমেয়েরা যখন পরীক্ষা দেয়, তার যে রেজাল্ট আসে, ৩০ বছর পর্যন্ত চাকরি দিলেও, ৩০ বছর বয়সে যে পরীক্ষা দেয়, সে কিন্তু বেশিরভাগ ফেল করে। তার ওই রেজাল্ট আসে না। আমি পুরো চার্ট বের করে নিয়ে এসেছিলাম। কম্পিটিশন করার, কাজ করার একটা দক্ষতা থাকতে হবে। পাশ করার একটা সময় থাকে।”
ইনফ্লেশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বাড়াব
সরকারপ্রধান বলেন, “যেহেতু ইনফ্লেশন কিছু বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সেই জায়গায় আবার কতটুকু পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া যায় সেই চিন্তা-ভাবনা করছি। কমিশন কর, এটা কর, সেটা কর, এতে খুব বেশি লাভ হয় না। কিছু লোক বঞ্চিত হয়ে যায়, আর কিছু লোক লাভবান হয়। এ জন্য প্রতি বছরের হিসাব মতো ইনফ্লেশন যত বাড়বে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমরা বেতন বাড়াব। তাছাড়া অনেক সুযোগও দিয়েছি। বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে ফ্ল্যাট কেনার লোন, গাড়ি কেনার লোনসহ অনেক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বেতন যেভাবে বাড়িয়ে দিয়েছিলাম সেটা কিন্তু সবার জন্যই। তাই আমাদের মহার্ঘ্য ভাতা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। যেহেতু ইনফ্লেশন বেড়ে গেছে, তাই ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন যেন বাড়তে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।”
বেসরকারি খাতের বিষয়টা সরকারের ব্যাপার না
বেসরকারি খাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এটা তাদের বিষয়। এটা সরকারের ব্যাপার না। বেসরকারি খাত করোনাভাইরাসের সময় যেন বিপদে না পড়ে তার জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা ভর্তুকিও দিয়েছি। এই ভর্তুকিটা বাজেটে বিপদে ফেলেছে।”
তিনি বলেন, “পৃথিবীর কোনো দেশে এমন ভর্তুকি দেয় না। বিদ্যুতে ভর্তুকি দেওয়ায় কে বেশি লাভ পায়? যে সবচেয়ে বেশি এয়ারকন্ডিশন চালায় তার লাভ হয়। গরিব মানুষের তো লাভ হয় না। আসলে লাভবান হচ্ছেন বিত্তশালীরা। সব জায়গায় জ্বালানি তেল, পরিবহন এত বেড়েছে। এটা টানা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। যে দামে উৎপাদন হবে সেই দামে কিনতে হবে। যে যতটুকু পারবেন ততটুকু কিনবেন। সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে এসব জায়গায় ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই করোনার সময়, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় বাজেট যে করতে পারছি এ জন্য ধন্যবাদ জানাবেন। বাজেটের প্রস্তুতি ঠিকঠাক করে দিয়েছি। কোনো অনাথ এসে কী বলছে সেই দায়িত্ব তো আমরা নেব না। আইএমএফ লোন তাদেরকেই দেয় যাদের লোন পরিশোধ করার সক্ষমতা থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এতো অনাথ হয়নি। দেওয়ার মতো সামর্থ্য আছে বলেই আমরা নিয়েছি, এটা বাস্তব কথা।”