শাহনাজের উপার্জনের একমাত্র উৎস তার স্কুটি। অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা উবারে বাইক চালিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে কোনওমতে দিনাতিপাত করছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে কৌশলে তার বাইকটি চুরি করে জুবায়দুল ইসলাম নামের এক যুবক।
গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বদৌলতে শাহনাজ আক্তার পুতুলের সংগ্রামী জীবনের কথা জানতেন অনেকেই। সমাজের ভ্রুকুটিকে উপেক্ষা করে তার এই সাহসী পদক্ষেপ প্রশংসিত হয় সমাজের সর্বস্তরে। তাই শাহনাজের বাইক চুরির ঘটনা শুনেই সরব হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। প্রতিবাদের পাশাপাশি অনেকেই যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন সংগ্রামী এই নারীর স্কুটি উদ্ধারে। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করা না গেলে কেউ কেউ নিয়েছিলেন আরেকটি নতুন বাইক কিনে দেওয়ার উদ্যোগ।
এদিকে, এই ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পর বিশেষ ভূমিকা নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শেষ পর্যন্ত পুলিশের ভূমিকায় চব্বিশ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে স্কুটিটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় স্কুটি চোর জুবায়দুল ইসলাম জনিকে। স্কুটি ফিরে পেয়ে পুলিশ ও গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান শাহনাজ।
ডিএমপির তেজগাঁও জোনের পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) আবু তায়েব মো. আরিফ গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'আমরা অভিযান শেষ করে বুধবার সকালে বাইক নিয়ে ফিরেছি। চোরকেও গ্রেফতার করেছি।'
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ১০ জানুয়ারি মিরপুরের শ্যামলী এলাকায় জনির সঙ্গে শাহনাজের পরিচয় হয়। এসময় তিনি নিজেকে পাঠাও চালক বলে পরিচয় দেন। জনি তাকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে বলে জানায়। আশ্বস্ত হয়ে চাকরির জন্য জনিকে অনুরোধ করি তিনি। একপর্যায়ে ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার সময় জনি শাহনাজকে খামারবাড়িতে আসতে বলেন। স্কুটি নিয়ে সেখানে এসে তার সঙ্গে দেখা করলে হঠাৎ জনি স্কুটিতে উঠে বসে শাহনাজকে নিয়ে বিমানবন্দর এলাকাসহ রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় ঘোরাঘুরির করেন। পরে আবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাজধানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এসে একটি টং দোকানে জনিকে নিয়ে চা খাচ্ছিলেন শাহনাজ। এমন সময় কৌশলে স্কুটি নিয়ে পালিয়ে যায় সে।