২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনা ঘটে। একদল উগ্রবাদী তরুণ সেদিন গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করেন।
হামলার ঘটনার পর আর চালু হয়নি হোলি আর্টিজান বেকারি। দুই তলা ভবনটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে আবাসিক ভবন হিসেবে। ভবন মালিকের সন্তানরা এখন বসবাস করছেন।
প্রতি বছর ১ জুলাই ঘটনা স্মরণে ফুল দিতে এলেও এ বছর ভবনের সামনে যেতে পারেনি কেউ। ভবনে অবস্থান করা পরিবারের সদস্যদের আপত্তির কারণে ভবনের পাশে তৈরি হয় অস্থায়ী মঞ্চ। সেখানে শ্রদ্ধা জানান দেশি-বিদেশিরা। ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাড়ির কেয়ারটেকার নাজমুল বাংলা এই প্রতিবেদককে বলেন, “দুই তলা ভবনের পুরোটাই আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে এখন ভবন মালিকের মেয়ে ও তার পরিবার থাকে। গত ৫ বছর ধরে স্বামী সন্তান নিয়ে এই বাসায় থাকছেন তারা। ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের ঘটনার পর প্রায় তিন বছর একইভাবে পড়েছিল ভবনটি।”
শনিবার (১ জুলাই) হোলি আর্টিজানের ৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারত, জাপান, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা। বাসায় ঢোকার আগেই অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। শ্রদ্ধা জানানোর পর কেউ যেন বাসায় ঢুকতে না পারে সে জন্য পাশে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আগের বছরগুলোতে কূটনীতিকরা বাসার সামনে যেতে পারলেও এ বছর আর ভেতরে যেতে পারেননি। ফুল দিয়েই ঘটনাস্থল ছেড়ে যান। কূটনীতিকরা যখন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছিলেন, তখন আকাশ থেকে ঝরছিল বৃষ্টি। সবাই ছাতা হাতে ফুল দিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার এলিন চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, “১ জুলাইয়ের ঘটনা স্মরণে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাদের নিরাপত্তায় ঘটনাস্থলে ছিলাম।”
ভবনের সামনে দায়িত্বে থাকা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, “ভবনটি এখন আবাসিক ভবন হিসেবে ভবন মালিকের পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করছেন। ভবনের বিপরীত পাশে লেকভিউ ক্লিনিক রয়েছে। দুটিরই মালিক একই ব্যক্তি। তিনি অনেক বছর আগে মারা গেছেন।”