সীসার বিষক্রিয়া এবং শিশুশ্রম: বাংলাদেশকে আরও অনেক দূর যেতে হবে
সীসার ক্ষতিকর প্রভাবে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ দেশ
রাবার বেলুন তৈরি করতে বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে কাজ করছে শিশুরা/ ঢাকা ট্রিবিউন
সাউদিয়া আফরিন
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ০৯:১৫ পিএমআপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ০৯:১৬ পিএম
বাংলাদেশ যখন বিপজ্জনক শিশুশ্রম নির্মূলের জন্য সংগ্রাম করছে, তখনও সরকারের নজরদারির বাইরে হাজার হাজার শিশু কর্মক্ষেত্রে সীসার সংস্পর্শে রয়েছে।
ঢাকা শহরের আশেপাশের এবং সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত কারখানায় ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির (ইউল্যাব) অননুমোদিত পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। ছোট ছোট ওয়ার্কশপে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই শিশুরা ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়ার কাজ করছে।
তথ্যের অভাব থাকায় এ্ই অনানুষ্ঠানিক খাত এখনও সরকারি তালিকার আওতায় আসেনি। এবং সমাজের বেশিরভাগ মানুষই সীসার বিষক্রিয়া এবং শিশু স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানে না।
অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বলছে, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজি বাইক বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাটারির বাজার বার্ষিক প্রায় ১২% বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, খু্ব বেশি দেরি হওয়ার আগেই এই খাতকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন দেশের শিশু অধিকার কর্মী এবং বিশেষজ্ঞরা।
পর্যাপ্ত তথ্য নেই
শিশুস্বাস্থ্যে সীসার ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অংশীদারী সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশেও ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নবম আন্তর্জাতিক সীসা বিষক্রিয়া প্রতিরোধ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।
যদিও ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানায় সীসার বিষক্রিয়া সরাসরি শিশুদের কি ধরনের ক্ষতি করে, সরকারের কাছে এ বিষয়ে সাম্প্রতিক কোনো তথ্য নেই। এবিষয়ে ২০০২ এবং ২০০৩ সালে সর্বশেষ জরিপ পরিচালিত হয়।
২০০৪ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, ব্যাটারি রিচার্জিং বা রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২২,৪৮০ জন শ্রমিক কাজে নিয়োজিত ছিল এবং তাদের মধ্যে ২৪.৬% ছিল ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ২০১৮ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ১,১০০টিরও বেশি অননুমোদিত এবং অবৈধ ইউল্যাব রিসাইক্লিং ইউনিট কাজ করছে।
বাংলাদেশে পিওর আর্থ এর টক্সিক সাইট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রামের অধীনে ২০২০ সালে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা দেশে ৩৪০টি কারখানার মধ্যে ২৮৯টিতে ক্ষতিকর ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির (ইউল্যাব) অননুমোদিত পুনর্ব্যবহার চলছে।
স্বাস্থ্য বনাম অর্থ
পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে, শিশু বা তাদের পরিবারের কেউই এই সীসা-দূষিত কারখানায় কাজ করতে আপত্তি জানায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৮০ জন শ্রমিক নিয়ে কাজ করা একটি কারখানায় ৫-১০ জন শিশু শ্রমিক রয়েছে যাদের বয়স ১২ এর বেশি নয়। বিশষজ্ঞরা বলেছেন, শিশু ছাড়াও এই ধরনের অবৈধ স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি বসবাসকারী ১০ লাখেরর বেশি মানুষ গুরতর স্বাস্থ্য আক্রান্ত হতে পারেন।
মোহাম্মদপুর, কামরাঙ্গীরচর, গাজীপুর এবং ধোলাইপাড় এলাকায় সাম্প্রতিক পরিদর্শনে দেখা গেছে, কোনো প্রতিরক্ষামূলক ছাড়াই শিশুরা বিভিন্ন কারখানায় ব্যাটারি ভাঙা, বাছাই এবং গলানোর কাজ করছে।
গলানোর কাজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাটারির দোকানের পেছনে, বসতবাড়ির পেছনের জঙ্গলে, ছোট শহরের মধ্যে আবাসিক এলাকায়, পরিত্যক্ত পোল্ট্রি ফার্ম, ময়দা মিল কিংবার ফিলিং স্টেশনগুলোতে হয়।
ব্যাটারি ভাঙার কাজ কার শিশুরা প্রতি কেজি ৪.৫ টাকা করে দিনে সাধারণত দিনে ৩০-৪০ কেজি সীসা বাছাই করতে পারে, যা থেকে তাদের দৈনিক সর্বোচ্চ আয় হয় ১৮০ টাকা।
ইউনিসেফ এবং পিওর আর্থের গত বছর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে, পিওর আর্থের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, আনুমানিক ৩৫.৫ মিলিয়ন শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম এর বেশি সীসা রয়েছে। আক্রান্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।
প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে সীসা-অ্যাট্রিবিউটেবল আইকিউ হ্রাসের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি দেশের জিডিপির ৫.৯% এর সমান।
সীসা শিশুদের আচরণগত সমস্যার পাশাপাশি একাডেমিক কর্মক্ষমতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে এবং রক্তস্বল্পতা এবং কিডনি বৈকল্যের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে বলে জানান মাহফুজুর রহমান।
ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর সিইও এবং নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা জানান, সীসার প্রভাবে শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতির পাশাপাশি তাদের বৃদ্ধি এবং বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এবং আচরণগত সমস্যার পাশাপাশি তাদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়, এমনি শ্রবণ ও বাক সমস্যা দেখা দেয়।
কি করা প্রয়োজন
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শিশু শ্রম ইউনিট এখনও ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার খাতকে শিশুদের জন্য ঝুঁকি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি।
তবে, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে এবং ধাতব আসবাবপত্র/কার পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে সীসার বিষক্রিয়ার বিষয়টি কিছুটা সমাধান করা হয়েছে ।
বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নির্মূল প্রকল্পের নবনিযুক্ত পরিচালক (৪র্থ পর্যায়) মনোয়ার হোসেন বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং আমরা কিছুদিন পর পর এটি হালনাগাদ করি।"
তিনি বলেন, “প্রায় ১ লাখ শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে দূরে রাখতে ২৮৪ কোটি টাকার প্রকল্পটি ১০ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।”
ইএসডিওর সিইও সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, “যেহেতু এই কারখানাগুলো এখনও অনানুষ্ঠানিক খাতের অধীনে, তাই কাজের ক্ষেত্রে বয়সসীমা এখানে মানা হয় না। যা শিশুদের অবাধ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়।”
তিনি বলেন, "ইউল্যাব প্রসেসিং ইউনিটে কাজ করার জন্য একটি বয়সসীমা নিশ্চিত করার জন্য খাতটিকে আনুষ্ঠানিক করতে হবে।"
পিওর আর্থ বাংলাদেশের মাহফুজুর রহমান বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে অনানুষ্ঠানিক ও অনিয়ন্ত্রিত খাতগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা দরকার।”
তিনি বলেন, “এটি ক্রমবর্ধমান একটি নতুন খাত, তাই অনেক কাজ করা দরকার। এবং এর জন্য স্বাস্থ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান, পরিবেশ, শিল্প ও শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়গুলোর দ্রুত, কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন।”
সীসার বিষক্রিয়া এবং শিশুশ্রম: বাংলাদেশকে আরও অনেক দূর যেতে হবে
সীসার ক্ষতিকর প্রভাবে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ দেশ
বাংলাদেশ যখন বিপজ্জনক শিশুশ্রম নির্মূলের জন্য সংগ্রাম করছে, তখনও সরকারের নজরদারির বাইরে হাজার হাজার শিশু কর্মক্ষেত্রে সীসার সংস্পর্শে রয়েছে।
ঢাকা শহরের আশেপাশের এবং সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত কারখানায় ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির (ইউল্যাব) অননুমোদিত পুনর্ব্যবহার হচ্ছে। ছোট ছোট ওয়ার্কশপে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই শিশুরা ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়ার কাজ করছে।
তথ্যের অভাব থাকায় এ্ই অনানুষ্ঠানিক খাত এখনও সরকারি তালিকার আওতায় আসেনি। এবং সমাজের বেশিরভাগ মানুষই সীসার বিষক্রিয়া এবং শিশু স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানে না।
অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বলছে, ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজি বাইক বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাটারির বাজার বার্ষিক প্রায় ১২% বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, খু্ব বেশি দেরি হওয়ার আগেই এই খাতকে পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন দেশের শিশু অধিকার কর্মী এবং বিশেষজ্ঞরা।
পর্যাপ্ত তথ্য নেই
শিশুস্বাস্থ্যে সীসার ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে অংশীদারী সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশেও ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নবম আন্তর্জাতিক সীসা বিষক্রিয়া প্রতিরোধ সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।
যদিও ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানায় সীসার বিষক্রিয়া সরাসরি শিশুদের কি ধরনের ক্ষতি করে, সরকারের কাছে এ বিষয়ে সাম্প্রতিক কোনো তথ্য নেই। এবিষয়ে ২০০২ এবং ২০০৩ সালে সর্বশেষ জরিপ পরিচালিত হয়।
২০০৪ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, ব্যাটারি রিচার্জিং বা রিসাইক্লিং প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২২,৪৮০ জন শ্রমিক কাজে নিয়োজিত ছিল এবং তাদের মধ্যে ২৪.৬% ছিল ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু।
বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ২০১৮ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ১,১০০টিরও বেশি অননুমোদিত এবং অবৈধ ইউল্যাব রিসাইক্লিং ইউনিট কাজ করছে।
বাংলাদেশে পিওর আর্থ এর টক্সিক সাইট আইডেন্টিফিকেশন প্রোগ্রামের অধীনে ২০২০ সালে একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা দেশে ৩৪০টি কারখানার মধ্যে ২৮৯টিতে ক্ষতিকর ব্যবহৃত লেড এসিড ব্যাটারির (ইউল্যাব) অননুমোদিত পুনর্ব্যবহার চলছে।
স্বাস্থ্য বনাম অর্থ
পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে, শিশু বা তাদের পরিবারের কেউই এই সীসা-দূষিত কারখানায় কাজ করতে আপত্তি জানায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৮০ জন শ্রমিক নিয়ে কাজ করা একটি কারখানায় ৫-১০ জন শিশু শ্রমিক রয়েছে যাদের বয়স ১২ এর বেশি নয়। বিশষজ্ঞরা বলেছেন, শিশু ছাড়াও এই ধরনের অবৈধ স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি বসবাসকারী ১০ লাখেরর বেশি মানুষ গুরতর স্বাস্থ্য আক্রান্ত হতে পারেন।
মোহাম্মদপুর, কামরাঙ্গীরচর, গাজীপুর এবং ধোলাইপাড় এলাকায় সাম্প্রতিক পরিদর্শনে দেখা গেছে, কোনো প্রতিরক্ষামূলক ছাড়াই শিশুরা বিভিন্ন কারখানায় ব্যাটারি ভাঙা, বাছাই এবং গলানোর কাজ করছে।
গলানোর কাজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাটারির দোকানের পেছনে, বসতবাড়ির পেছনের জঙ্গলে, ছোট শহরের মধ্যে আবাসিক এলাকায়, পরিত্যক্ত পোল্ট্রি ফার্ম, ময়দা মিল কিংবার ফিলিং স্টেশনগুলোতে হয়।
ব্যাটারি ভাঙার কাজ কার শিশুরা প্রতি কেজি ৪.৫ টাকা করে দিনে সাধারণত দিনে ৩০-৪০ কেজি সীসা বাছাই করতে পারে, যা থেকে তাদের দৈনিক সর্বোচ্চ আয় হয় ১৮০ টাকা।
ইউনিসেফ এবং পিওর আর্থের গত বছর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে, পিওর আর্থের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, আনুমানিক ৩৫.৫ মিলিয়ন শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৫ মাইক্রোগ্রাম এর বেশি সীসা রয়েছে। আক্রান্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।
প্রতিবেদনে ধারণা করা হয়েছে যে, বাংলাদেশে সীসা-অ্যাট্রিবিউটেবল আইকিউ হ্রাসের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি দেশের জিডিপির ৫.৯% এর সমান।
সীসা শিশুদের আচরণগত সমস্যার পাশাপাশি একাডেমিক কর্মক্ষমতাকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে এবং রক্তস্বল্পতা এবং কিডনি বৈকল্যের মতো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে বলে জানান মাহফুজুর রহমান।
ইকো-সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) এর সিইও এবং নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা জানান, সীসার প্রভাবে শিশুর মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতির পাশাপাশি তাদের বৃদ্ধি এবং বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। এবং আচরণগত সমস্যার পাশাপাশি তাদের শেখার ক্ষমতা কমে যায়, এমনি শ্রবণ ও বাক সমস্যা দেখা দেয়।
কি করা প্রয়োজন
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের শিশু শ্রম ইউনিট এখনও ব্যাটারি পুনর্ব্যবহার খাতকে শিশুদের জন্য ঝুঁকি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি।
তবে, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে এবং ধাতব আসবাবপত্র/কার পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে সীসার বিষক্রিয়ার বিষয়টি কিছুটা সমাধান করা হয়েছে ।
বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নির্মূল প্রকল্পের নবনিযুক্ত পরিচালক (৪র্থ পর্যায়) মনোয়ার হোসেন বলেন, "ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং আমরা কিছুদিন পর পর এটি হালনাগাদ করি।"
তিনি বলেন, “প্রায় ১ লাখ শিশুকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে দূরে রাখতে ২৮৪ কোটি টাকার প্রকল্পটি ১০ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।”
ইএসডিওর সিইও সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, “যেহেতু এই কারখানাগুলো এখনও অনানুষ্ঠানিক খাতের অধীনে, তাই কাজের ক্ষেত্রে বয়সসীমা এখানে মানা হয় না। যা শিশুদের অবাধ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়।”
তিনি বলেন, "ইউল্যাব প্রসেসিং ইউনিটে কাজ করার জন্য একটি বয়সসীমা নিশ্চিত করার জন্য খাতটিকে আনুষ্ঠানিক করতে হবে।"
পিওর আর্থ বাংলাদেশের মাহফুজুর রহমান বলেন, “শিশুশ্রম নিরসনে অনানুষ্ঠানিক ও অনিয়ন্ত্রিত খাতগুলোকে মনিটরিংয়ের আওতায় আনা দরকার।”
তিনি বলেন, “এটি ক্রমবর্ধমান একটি নতুন খাত, তাই অনেক কাজ করা দরকার। এবং এর জন্য স্বাস্থ্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান, পরিবেশ, শিল্প ও শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়গুলোর দ্রুত, কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন।”