সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর হালনাগাদ তথ্য নেই বন বিভাগের কাছে
বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বনমহিষ, মিঠাপানির কুমির, চিতাবাঘ ও চার প্রজাতির পাখি
সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সৌম্যজিৎ নন্দী
ট্রিবিউন ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২১, ১২:২৬ পিএমআপডেট : ২১ অক্টোবর ২০২১, ১২:২৬ পিএম
জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানুষের নানা অত্যাচারে সুন্দরবনের অনেক বন্যপ্রাণীর অবস্থা সংকটাপন্ন। ইতোপূর্বে বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বনমহিষ, মিঠাপানির কুমির, চিতাবাঘ ও চার প্রজাতির পাখি। বিষ দিয়ে বনের নদী-খালে মাছ ধরায় প্রভাব পড়ছে মাছ ও কাঁকড়ার ওপর।
দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর শুমারি হয়নি। ফলে বন্যপ্রাণীর প্রজাতি ও সংখ্যার কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই বন বিভাগের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনের হালনাগাদ তথ্য এবং অবস্থা জানা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার জন্য খুবই জরুরি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে জলাভূমি ১ হাজার ১৮৫ বর্গকিলোমিটার এবং বনভূমি আছে ৪ হাজার ৮৩২ বর্গকিলোমিটার।
২০১৫ সালের বাঘ শুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি যা ২০১৮ সালের বাঘ শুমারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪টি। সর্বশেষ ২০১৭ সালের কুমিরের সমীক্ষায় সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ১৫০-২০৫টি। ওই সমীক্ষায় কুমিরের জন্য সাতটি হুমকি চিহ্নিত করা হয়।
হুমকিগুলো হচ্ছে- বিষ দিয়ে মাছ ধরা, জেলেদের জালে আটকা পড়ে কুমিরের বাচ্চার মৃত্যু, মৌয়ালদের চলাফেরার কারণে কুমিরের ডিমে তা দিতে সমস্যা, নৌযান ও শিল্প-কারখানার বর্জ্য দূষণ, কুমিরের ডিম খেয়ে ফেলে গুইসাপ, পানিতে লবণাক্তটা বেড়ে যাওয়া এবং ছোট বাচ্চা খেয়ে ফেলে পুরুষ কুমির।
সুন্দরবনে হরিণ, বানর, শূকর, উদবিড়ালের সর্বশেষ শুমারি হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। সে তথ্য অনুযায়ী, বনে উদবিড়াল ছিল ২০ থেকে ২৫ হাজার, হরিণ ছিল এক থেকে দেড় লাখ, বানর ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার, কুমির ১৫০ থেকে ২০৫, শূকর ২০ থেকে ২৫ হাজার। পরবর্তীতে এখন পর্যন্ত এই চারটি বন্যপ্রাণীর শুমারি হয়নি। ফলে এই প্রাণীগুলোর বর্তমান অবস্থা জানা নেই বন বিভাগের।
এছাড়াও সুন্দরবনে কচ্ছপ, পাখি, গুইসাপ, অজগর, বনমোরগসহ রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী। কিন্তু এই প্রাণী গুলোর শুমারি কখনও হয়নি। বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ ও শূকরের বর্তমান অবস্থাও জানা নেই সংস্থাটির। বন্যপ্রাণী বাড়ছে নাকি কমছে তাও জানে না সংস্থাটি।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার জন্য সুন্দরবনে কোন প্রজাতির প্রাণী কি পরিমাণ রয়েছে তা জানা খুবই জরুরি। বন বিভাগকে সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “পণ্য ও পর্যটকবাহী জলযান চলাচলের কারণে বন্যপ্রাণী নদীর তীর থেকে ভেতরের দিকে সরে যেতে পারে। সে জন্য হয়তো আগের তুলনায় প্রাণী কম দেখা যায়।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, “বন্যপ্রাণীর সঠিক ধারণা থাকা জরুরি। বন সংরক্ষণ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য হলেও একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রাণীদের ওপর জরিপ পরিচালনা করা উচিত।”
সুন্দরবনে বন্যপ্রাণীর হালনাগাদ তথ্য নেই বন বিভাগের কাছে
বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বনমহিষ, মিঠাপানির কুমির, চিতাবাঘ ও চার প্রজাতির পাখি
জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানুষের নানা অত্যাচারে সুন্দরবনের অনেক বন্যপ্রাণীর অবস্থা সংকটাপন্ন। ইতোপূর্বে বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বনমহিষ, মিঠাপানির কুমির, চিতাবাঘ ও চার প্রজাতির পাখি। বিষ দিয়ে বনের নদী-খালে মাছ ধরায় প্রভাব পড়ছে মাছ ও কাঁকড়ার ওপর।
দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীর শুমারি হয়নি। ফলে বন্যপ্রাণীর প্রজাতি ও সংখ্যার কোনো হালনাগাদ তথ্য নেই বন বিভাগের কাছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনের হালনাগাদ তথ্য এবং অবস্থা জানা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার জন্য খুবই জরুরি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের বৃহত্তম এই ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের আয়তন ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে জলাভূমি ১ হাজার ১৮৫ বর্গকিলোমিটার এবং বনভূমি আছে ৪ হাজার ৮৩২ বর্গকিলোমিটার।
২০১৫ সালের বাঘ শুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি যা ২০১৮ সালের বাঘ শুমারিতে বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪টি। সর্বশেষ ২০১৭ সালের কুমিরের সমীক্ষায় সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ১৫০-২০৫টি। ওই সমীক্ষায় কুমিরের জন্য সাতটি হুমকি চিহ্নিত করা হয়।
হুমকিগুলো হচ্ছে- বিষ দিয়ে মাছ ধরা, জেলেদের জালে আটকা পড়ে কুমিরের বাচ্চার মৃত্যু, মৌয়ালদের চলাফেরার কারণে কুমিরের ডিমে তা দিতে সমস্যা, নৌযান ও শিল্প-কারখানার বর্জ্য দূষণ, কুমিরের ডিম খেয়ে ফেলে গুইসাপ, পানিতে লবণাক্তটা বেড়ে যাওয়া এবং ছোট বাচ্চা খেয়ে ফেলে পুরুষ কুমির।
সুন্দরবনে হরিণ, বানর, শূকর, উদবিড়ালের সর্বশেষ শুমারি হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। সে তথ্য অনুযায়ী, বনে উদবিড়াল ছিল ২০ থেকে ২৫ হাজার, হরিণ ছিল এক থেকে দেড় লাখ, বানর ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার, কুমির ১৫০ থেকে ২০৫, শূকর ২০ থেকে ২৫ হাজার। পরবর্তীতে এখন পর্যন্ত এই চারটি বন্যপ্রাণীর শুমারি হয়নি। ফলে এই প্রাণীগুলোর বর্তমান অবস্থা জানা নেই বন বিভাগের।
এছাড়াও সুন্দরবনে কচ্ছপ, পাখি, গুইসাপ, অজগর, বনমোরগসহ রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী। কিন্তু এই প্রাণী গুলোর শুমারি কখনও হয়নি। বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ ও শূকরের বর্তমান অবস্থাও জানা নেই সংস্থাটির। বন্যপ্রাণী বাড়ছে নাকি কমছে তাও জানে না সংস্থাটি।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, “বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার জন্য সুন্দরবনে কোন প্রজাতির প্রাণী কি পরিমাণ রয়েছে তা জানা খুবই জরুরি। বন বিভাগকে সে জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “পণ্য ও পর্যটকবাহী জলযান চলাচলের কারণে বন্যপ্রাণী নদীর তীর থেকে ভেতরের দিকে সরে যেতে পারে। সে জন্য হয়তো আগের তুলনায় প্রাণী কম দেখা যায়।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, “বন্যপ্রাণীর সঠিক ধারণা থাকা জরুরি। বন সংরক্ষণ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য হলেও একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রাণীদের ওপর জরিপ পরিচালনা করা উচিত।”