Sunday, March 16, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

জাবির ভর্তি পরীক্ষায় শিফট বৈষম্যের শিকার ভর্তিচ্ছুরা

১০টি শিফটের মধ্যে পঞ্চম শিফট থেকে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে সর্বোচ্চ ১০৪ জন শিক্ষার্থী। অন্যদিকে, তৃতীয় শিফট থেকে মাত্র একজন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে

আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ এএম

এক শিফটে একজন অন্য শিফটে ১০৪ জন মেধা তালিকায়। এভাবেই ফল প্রকাশ হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের “ডি” ইউনিটের (জীববিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার। এই বৈষম্যকে প্রশ্নপত্রের অসামঞ্জস্য ও মেধার অবমূল্যায়ন বলে অভিহিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। 

“ডি” ইউনিটের প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১০টি শিফটের মধ্যে পঞ্চম শিফট থেকে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে সর্বোচ্চ ১০৪ জন শিক্ষার্থী। যা মোট আসনের ৩২.৫%। অন্যদিকে, তৃতীয় শিফট থেকে মাত্র একজন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। যা মোট আসনের ০.৩২%।

এছাড়া প্রথম শিফট থেকে ১০ জন, দ্বিতীয় শিফট থেকে ৭ জন, চতুর্থ শিফট থেকে ১৮, ষষ্ঠ শিফট থেকে ২২, সপ্তম শিফট থেকে ৫৩, অষ্টম শিফট থেকে ২৯, নবম শিফট থেকে ৪৯ এবং দশম শিফট থেকে ২৭ জন শিক্ষার্থী স্থান পেয়েছে। সব মিলিয়ে ৩২০ জনের নাম মেধা তালিকায় রয়েছে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রতিটি শিফটের পরীক্ষায় প্রায় সমান সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নিলেও কোনো কোনো শিফটে পরীক্ষা দিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় স্থান পাচ্ছেন আবার কোনো কোনো শিফট থেকে গুটি কয়েক শিক্ষার্থী স্থান পাচ্ছেন। এর ফলে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশ্ন তুলেছেন পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে।

চতুর্থ শিফটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী হান্নান সরকার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের শিফট-ভিত্তিক পদ্ধতিতে পরীক্ষার আয়োজন করেছে। এখন দেখছি শিফট পদ্ধতিতে মারাত্মক বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যদি এভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করে আমাদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এ ধরনের বৈষম্যের অবসান করা হোক, প্রকৃত মেধার মূল্য শিক্ষার্থীরা পাক।”

বিতর্কিত শিফট পদ্ধতির ব্যাপারে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল রনি বলেন, “ভর্তি পরীক্ষার একেক শিফটে একেক ধরনের প্রশ্ন হওয়ায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মেধা যাচাইয়ের মানদণ্ড নিঃসন্দেহে বৈষম্যের কারণ হয়ে ওঠেছে। পরীক্ষার কেন্দ্র বৃদ্ধি করে বা বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করলে তা এড়ানো যেতো।”

ভর্তি পরীক্ষার এমন ফলাফলে শঙ্কা প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম।

তিনি বলেন, “পরীক্ষা পদ্ধতির কারণে সমস্যা হয়, তবে এত বেশি সমস্যা হওয়ার তো কথা না। এক শিফট থেকে ১০৪ জন আসবে অন্যদিকে অন্য একটা শিফট থেকে মাত্র ১ জন। এখনও তো ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়নি। শেষ হলে আমরা বিশ্লেষণ করে দেখব কোন শিফট থেকে বেশি আর কোন শিফট থেকে কম আসছে। কীভাবে সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায় সেটা দেখব।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, “আমরা অনেকবার বলেছি শিফট পদ্ধতি বাদ দিয়ে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিতে। এ জন্য প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন শহরে পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। তাতে বৈষম্য কমবে এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমবে।”

তিনি আরও বলেন, “সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষকগণ নীতি নির্ধারণ করেন। যাদের অধিকাংশই উপাচার্য ও প্রশাসনের আজ্ঞাবহ। এতে সেবাগ্রহীতাদের কোন মতামত পরোয়া করা হয় না। আমরা অনেক দিন বলার পরেও তারা শুনছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সেখান থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।”

   

About

Popular Links

x