ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া দেশের সবচেয়ে বড় সাহিত্য উৎসব অমর একুশে বইমেলা আয়োজনে প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে।
মেলা প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেছেন, "এ বছরের মেলা হবে যেকোনো বারের চেয়ে বড় এবং থাকবে অধিক পাঠক-বান্ধব পরিবেশ।"
মেলা আয়োজন কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ জানান, এবারের বই মেলার প্রতিপাদ্য ‘বিজয়: ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ এবং নবপর্যায়’।
মেলার স্টল ও প্রধান মঞ্চ তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, গত বছরের মেলায় আয়তন বাড়ানোর পাশাপাশি স্টল সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে মেলায় জায়গার পরিমাণ ছিল সাড়ে ৫ লাখ বর্গফুট, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ হাজার বর্গফুট বেশি।
এ বছর মেলার পরিকল্পনায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্লাস টাওয়ারকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর। যার ফলে টাওয়ার থেকে আসা আলোতে পুরো এলাকা উদ্ভাসিত হয়ে থাকবে। মেলার পুরো ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকছে অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের প্রতিষ্ঠান নিরাপদ মিডিয়া ও কমিউনিকেশন।
মাসব্যাপী চলা মেলায় প্রতিদিনই মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এতে মুক্তিযোদ্ধা, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকরা অংশ নেবেন।
মেলায় অংশ নেয়ার জন্য ১৯টি নতুন প্রকাশনীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ছয় শতাধিক স্টল ও ৪২টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকা শতাধিক স্টল নানা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট রাখা হয়েছে বলে একাডেমি সূত্র জানিয়েছে।
প্যাভিলিয়নের সংখ্যা এ বছরও একই থাকছে। বাংলা একাডেমি ও আরও ২৩টি প্রকাশনীকে প্যাভিলিয়ন দেয়া হয়েছে। সেই সাথে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩৩৮টি প্রতিষ্ঠানের মাঝে ৫৯৩টি ইউনিট বণ্টন করা হয়েছে।
মেলায় বই নিয়ে আসতে প্রকাশকরা দিনরাত কাজ করে চলেছেন। এবার চার হাজার ৫৯১টি নতুন বই আসতে পারে বলে একাডেমি জানিয়েছে। লেখক ও প্রকাশকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বইয়ের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বাংলা একাডেমি তথ্যকেন্দ্র থেকে জানা যায়, গত বছর রেকর্ড ৭০ কোটি ৫৪ লাখ টাকার বই বিক্রির মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি হয়। আর ২০১৭ সালে ৬৫ কোটি ৪০ লাখ, ২০১৬ সালে সাড়ে ৪০ কোটি ও ২০১৫ সালে ২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বই বিক্রি হয়েছিল।
প্রকাশকরা বলছেন, এ বছরও তারা ভালো বিক্রির আশা করছেন।
বাংলা একাডেমি এ বছর প্রথমবারের মতো প্রকাশকদের জন্য অনলাইনে আবেদন ব্যবস্থা চালু করে। সেই সাথে মেলায় আগতরা যাতে সহজে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্টল খুঁজে পেতে পারেন সে জন্য থাকছে জিপিএস সুবিধা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করবেন। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ভারতীয় কবি শঙ্খ ঘোষ ও মিসরীয় লেখক ও কবি মোহসেন আল আরিশি।