আয়কর দাবি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেওয়া নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তিনটি আয়কর রেফারেন্স মামলা খারিজ করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (২৩ জুলাই) এ সংক্রান্ত লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানিতে আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী।
এর ফলে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় এনবিআরকে ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালের দানকর ফাঁকি বাবদ বকেয়া ১২ কোটি টাকারও বেশি পরিশোধ করতে হবে।
এ সংক্রান্ত তিনটি মামলার শুনানি শেষে গত ৩১ মে বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২১ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে ড. ইউনূসকে নোটিশ পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়। আবার ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।
দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের ওই তিনটি নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন ড. ইউনূস। ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা করা হয়। মামলায় ড. ইউনূসের দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এই কর দাবি করতে পারে না।
এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করেন আদালত। এরপর ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে তিনটি রিট মামলা করেন। ওই মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৩১ মে রায় দেন হাইকোর্ট।
এনবিআর মোট ১৫ কোটি টাকা কর দাবি করলেও আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এই আবেদন করার সময় তিন কোটি টাকা জমা দিতে হয়েছিল ইউনূসকে। হাইকোর্টে মামলা হারায় বাকি ১২ কোটি টাকাও তাকে পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।