খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় তিন নারী ফুটবলার ও এক ফুটবলারের মা'কে মারধর করা হয়েছে। আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে শনিবার উপজেলার তেঁতুলতলা স্কুল মাঠে অনুশীলনের সময় ওই ফুটবলারদের ওপর চড়াও হয় স্থানীয় কয়েকজন। এ ঘটনায় সাদিয়া নাসরিন নামে এক ভুক্তভোগী ছয়জনকে আসামি করে বটিয়াঘাটা থানায় একটি মামলা করেছেন।
মামলার মূল অভিযুক্ত নুর আলম একই উপজেলার বাসিন্দা। অন্য আসামিরা হলেন- নুপুর খাতুন (২২), আলাউদ্দিন (১৬), সালাউদ্দিন (২২), নুর আলম (৪৮), রঞ্জি বেগম (৪০) ও মনোয়ারা বেগম (৭০)।
আহতরা হলেন- মঙ্গলী বাগচী (১৯), হাজেরা খাতুন (১৯) জুই মন্ডল (১৭), সাদিয়া ও তার মা। তাদের সবার বাড়ি একই এলাকায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ওই ফুটবলাররা তেঁতুলতলা গ্রামের কুইন একাডেমি মাঠে অনুশীলন করতেন। অভিযুক্ত নুপুর সেই অনুশীলনের ছবি তুলে সাদিয়ার বাবা-মাকে দেখান। এ নিয়ে সাদিয়ার বাবা-মা তাকে শাসায়। ছবি তোলার বিষয়টি শনিবার নুপুরকে জিজ্ঞেস করেন সাদিয়া। এতে নুপুর ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গালিগালাজ করেন ও একপর্যায়ে তাকে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, ঘুষি দিয়ে জখম করেন। স্থানীয়রা এসে সাদিয়াকে উদ্ধার করেন। বিষয়টি সাদিয়া তার অভিভাবক, সতীর্থ ও কোচকে জানান।
সন্ধ্যায় তারা সবাই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নুপুরের বাড়ি যান। তখন নুপুর ও তার কয়েকজন ক্রুদ্ধ হয়ে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় নুর আলম লোহার রড দিয়ে ফুটবলার মঙ্গলী বাগচির মাথায় আঘাত করেন। আরেক আসামি সালাউদ্দিন চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাকে মারতে উদ্যত হন। মারধরে ফুটবলাররা জখম হন। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন এবং উদ্ধার করে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
আহত মঙ্গলী জানান, তারা নিয়মিত অনুশীলন করেন। এর মধ্যে সাদিয়া নামে এক সতীর্থের পরিবার সম্মতি না দেওয়ায় সে লুকিয়ে অনুশীলন করত। স্থানীয় কয়েকজন মাঠে থেকে দূরে রাখার দুরভিসন্ধি থেকে নুপুরকে দিয়ে গোপনে অনুশীলনের ছবি তুলে সাদিয়ার পরিবারকে দেখায়। সেই কথাই নুপুরের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাদিয়া। এতে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সাদিয়াকে মারধর করে। আমরা সবাই প্রতিবাদ জানালে তারা সবাইকে মারধর করে।
ওসি শওকত কবির বলেন, ফুটবল খেলার ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট মতবিরোধ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেয়ে নুর আলম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।