রাজশাহীর পবায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা সুলতান আলী নামে জেলার বাঘা উপজেলার এক ব্যক্তিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছিলেন। সেই হত্যাকাণ্ড থেকে চোখ ফেরাতে মরদেহ ট্রাকের নিচে ফেলে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়েছিলেন। তবে শেষরক্ষা হলো না তাদের।
অভিযুক্তরা হলেন- সবুজ আলী (২৮), কাওসার আলী (৪২), সজল আহমেদ (২৮) ও সুইটি খাতুন (২২)।
অভিযুক্তদের মধ্যে সজল হত্যাকাণ্ডে কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।
পুলিশ জানায়, গত ১ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজশাহীর নওহাটা দুয়ারীগামী রাস্তা থেকে সুলতান আলীকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গত ২২ জুলাই মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পায় পুলিশ। এতে জানা যায় শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে সুলতানকে। এ ঘটনায় সুলতানের স্ত্রী বাদী হয়ে গত ২৪ জুলাই পবা থানায় অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
আরএমপি মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৪ জুলাই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযুক্তদের বরাতে পুলিশ আরও জানায়, সুলতান ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। দুই মাস আগে মোবাইল ফোনে আসামি সজলের স্ত্রী সুইটির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রে প্রায় সুইটির সঙ্গে দেখা করতে চাইতেন তিনি। প্রস্তাবে রাজি না হলে তার তিন বছর বয়সী সন্তানের ক্ষতি করার হুমকি দেন। সুইটি বিষয়টি তার স্বামী সজলকে জানান।
স্ত্রীর নালিশের জেরে সুলতানকে "শায়েস্তা" করার পরিকল্পনা করেন সজল।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সুলতানকে রাজশাহীতে ডেকে আনা হয়। গত ১ জুলাই রাজশাহীর পবা ও তানোর থানার সীমান্তবর্তী নাইস গার্ডেনে সুইটির সঙ্গে দেখা করতে আসেন সুলতান। সেখান থেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী সুলতানকে নওহাটায় নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে মারধর করে সুলতানকে তার স্বজনদের ডেকে আনতে বলা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় অভিযুক্তরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
উপপুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, “হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজান অভিযুক্তরা। চলন্ত ট্রাকের সামনে মৃত সুলতানকে ফেলে পালিয়ে যান তারা। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ সুলতানকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”