পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) সেন্টমার্টিন দ্বীপের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়েছে।
বঙ্গোপসাগরের আট বর্গকিলোমিটার দ্বীপে বসবাসকারী দশ হাজারেরও বেশি মানুষ বর্তমানে এই অনিশ্চিত আবহাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে।
সম্প্রতি, সেন্টমার্টিন ঘূর্ণিঝড় মোখা দ্বারা আঘাত হানে, যার ফলে দ্বীপের অসংখ্য বাড়িঘরক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এরপর আবারও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বাসিন্দারা।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, “সকাল থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।”
সাগরের পানির উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়েছে। ফলে দ্বীপের তীরের কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।
এছাড়া দ্বীপের ডেইলপাড়া, উত্তরপাড়া, দক্ষিণপাড়ার শেষ প্রান্তের গলাচিপা এলাকাসহ কয়েকটি জায়গা জোয়ারের তোড়ে ভেঙে গেছে, উপড়ে গেছে গাছপালা।
সেন্টমাটিন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ খোরশেদ বলেন, “দ্বীপে সাগরের পানির উচ্চতা অনেক বেড়েছে। যার ফলে তীরের বাসিন্দাদের কয়েকটি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে।”
দ্বীপের তীরের কিছু অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত চারপাশে বাঁধ না দিলে দ্বীপের অস্তিত্ব থাকবে না বলে জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, “সেন্টমার্টিন দ্বীপে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন থেকে চার ফুট পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।”
জোয়ারের তোড়ে দ্বীপের উত্তর, পশ্চিম-পূর্বের কিছু জায়গা ভাঙছে বলেও জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত এই দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে একটি প্রিয় গন্তব্য। তবে এটি এখন বিলুপ্ত হওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে।
রবিবার সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপর প্রস্তুত করা একটি প্রতিবেদন পরিবেশ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পেশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চব্বিশ বছর আগে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা এবং দেড় বছর আগে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণার পরও দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৈকত থেকে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজ কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ বিভিন্ন কোরাল প্রজাতি ইতোমধ্যে হারিয়ে গেছে।
মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পর্যটন ছাড়াও মানুষের অতিরিক্ত চাপ, মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য আহরণ এবং প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য ফেলার কারণে দ্বীপটির জীব-বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। আট বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপে বিভিন্ন সরকারি ভবন ছাড়াও প্রায় ২০০ অনুমোদনহীন ভবন রয়েছে, যা আইনত অবৈধ।