বগুড়ার শেরপুরে পরিচয় লুকিয়ে তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে মিঠুন সরকার নামে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে।গত ৯ আগস্ট বগুড়ার জেলা পুলিশ সুপারের সই করা এক আদেশে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা।
পুলিশ জানায়, ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একটি জাতীয় একটি দৈনিকের পাঠক ফোরামের সদস্য ছিলেন ওই তরুণী। সেই সংগঠনের সূত্রে পরিচয় থেকেই এক তরুণের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও পরে তাদের বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। এর দুই বছর পর তার প্রাক্তন স্বামী আরেকটি বিয়ে করেন। তবে সেই বিয়ের কথা গোপন করে আবারও তিনি ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক করেন এবং তারা একত্রে থাকতে শুরু করেন।
এদিকে, ওই তরুণ তার কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন। ভুক্তভোগী তরুণী তাকে আবারও বিয়ের কথা বললে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। একপর্যায়ে প্রাক্তন স্বামী তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে ভুক্তভোগী তার বাড়ি গিয়ে অনশন করেন। বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়াভাবে বসা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
সম্প্রতি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে পাওনা টাকা উদ্ধারে সহায়তা চান। সেই কলের সূত্র ধরে শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিঠুন সরকার তার বাড়িতে যান। এরপরই সহযোগিতার নামে পরিচয় গোপন করে ওই তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে তরুণী তাকে বিয়ের কথা বললে এসআই তা প্রত্যাখান করেন। এরই জেরে গত ২২ জুলাই ওই তরুণী বগুড়ার পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ দেন।
পুলিশ সুপার বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদকে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ আগস্ট ওই এসআই মিঠুনকে আদমদীঘি থানায় বদলি করা হয়। এরপর সাময়িক বরখাস্ত করে তাকে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
অভিযুক্ত এসআই মিঠুন সরকার ওই তরুণীর সঙ্গে কোনো সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “একটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুর রশিদ সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
এদিকে বগুড়া জেলা পুলিশের সূত্র ও শেরপুরের মির্জাপুর এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অর্থের বিনিময়ে ওই তরুণীর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। তবুও বিভাগীয় শাস্তি হিসেবে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বাড়িতে গেলেও অভিযোগকারী তরুণীকে পাওয়া যায়নি। তার ফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানা যায়নি।