বিদ্যালয়ের “বৃহত্তর স্বার্থে” অবিবাহিত সহকারী শিক্ষককে বিয়ে করার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে নোটিশ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
গত ২৬ জুলাই জেলার গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপকে নোটিশ দেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
রনি প্রতাপ ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বিদ্যালয়টিতে সহকারী শিক্ষক (হিদু ধর্ম) পদে যোগদান করেন।
নোটিশে প্রধান শিক্ষক বলেন, “বিদ্যালয়ে যোগদানের পর জানতে পারি আপনি (রনি প্রতাপ) অবিবাহিত। পরবর্তী সময়ে আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে বিয়ের তাগিদ দিয়েছি। অতীব দুঃখের বিষয়, আপনি এখনো বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকদের প্রশ্ন তোলার আগে আপনি বিবাহ কার্য সম্পন্ন করেন।”
নোটিশ পাওয়ার দুদিন পর শিক্ষক রনি প্রতাপ লিখিত জবাব দেন। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের বিয়ের পাত্র-পাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। পারিবারিক ও ধর্মীয় নিয়মের কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার বিবাহ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমার অভিভাবকেরা।”
রনি প্রতাপের এই জবাব পছন্দ হয়নি প্রধান শিক্ষকের। তাকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে বিয়ে করতে ফের বলা হয়েছে। অন্যথায় চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
হুঁশিয়ারি পাওয়ার পর গত ৩০ জুলাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানার কাছে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ।
অভিযোগে বলেন, “আমি অবিবাহিত থাকলেও কোনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থী কখনো কারো নিকট আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। বিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই তদন্ত কাজে যেন সাহায্য না করি তার জন্য প্রধান শিক্ষক আমার বিয়ের বিষয়টি সামনে এনে হয়রানির চেষ্টা করছেন।”
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “রনি প্রতাপের স্বভাব চরিত্র নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চলমান থাকায় অবিবাহিত শিক্ষককে নিয়ে অসুবিধা হতেই পারে। অনৈতিক কিছু ঘটতে পারে। এ জন্য তাকে বিয়ে করার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা বলেন, “ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। এভাবে নোটিশ করার এখতিয়ার কোনো প্রধান শিক্ষকের নেই।”