দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭৬ জনে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকার মধ্যে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও ২,৩৬৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৯৯ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১,৪৬৮ জন।
অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০০০ সালে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ বছর সর্বোচ্চ ৫৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে, সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ২০২২ সালে ছিল ২৮১ জন।
নতুন আক্রান্তসহ এই বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১২১,৫০০। এরমধ্যে ১১২,৪৭৮ জন সুস্থ হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮,৪৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৩,৯০৮ জন ঢাকায় ও ৪,৫৩৮ জন বাইরের অঞ্চলে।
ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের মধ্যে ৪৬,০১১ জন নারী ও ৭৫,৪৮৯ জন পুরুষ। আর মৃতদের মধ্যে ৩৩৩ জন নারী ও ২৪৩ জন পুরুষ।
অধিদপ্তর এই বছরের আগস্টে ঢাকার বাইরে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত করেছে। অর্থাৎ এটি এখন দেশ জুড়েই ছড়িয়ে পড়েছে।
আগস্ট মাসে বুধবার পর্যন্ত ৬৯,৬৬৮ জন আক্রান্ত শনাক্ত ও ৩২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০০ সালে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এটি এক মাসে সর্বোচ্চ ও অন্য যে কোনো বছরের তুলনায়ও বেশি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০০ সালে ভেক্টরবাহিত রোগটি ঢাকা শহরে মানুষকে আক্রান্ত করতে শুরু করে। পরবর্তী সময়ে শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হয়।
তবে ডেঙ্গু রোগের প্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এটি ধীরে ধীরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।
তারা বলেন, দেশের ৬৪টি জেলায় ডেঙ্গু শনাক্তের তথ্য পাওয়া গেছে।
শুধুমাত্র জুলাই মাসে ৪৩,৮৫৪ জনের ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য পাওয়া গেছে। যেখানে, ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কীটবিজ্ঞানীরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন মহামারী হিসাবে আবির্ভূত হওয়ায় এটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা, বিশেষ করে সিটি কর্পোরেশন মশা নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতে, ঢাকা শহরের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধায় ডেঙ্গু রোগীর চাপ কিছুটা কমেছে। অর্থাৎ ঢাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। তবে ঢাকা শহরের বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।