ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জোরপূর্বক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই যুবককের পুরুষাঙ্গ কেটে হিজড়ায় রুপান্তর করার অভিযোগ এসছে হিজড়া সরদার মনিরা ওরফে রত্নার বিরুদ্ধে। ঈদের প্রায় এক সপ্তাহ আগে যশোরের একটি বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক এ অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় গত বুধবার (২০ জুন) সন্ধ্যায়। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুলতান আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী দুই যুবক হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার ঘোপপাড়া গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে কাজল হোসেন (২৩) ও একই উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কেসমত গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (২২)।
ভুক্তভোগীদের পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনায় হিজড়া সরদার রত্নার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ তাদের মামলা গ্রহণ করেনি। তবে পুলিশের দাবি, এ ধরনের কোনও অভিযোগ কেউ দেয়নি।
ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলামের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, "ছোটবেলা থেকে আমার ছেলের আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক। কালীগঞ্জের হিজড়া সরদার মনিরা প্রায়ই টাকার প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে তাদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য চাপ দিতো। ঈদের এক সপ্তাহ আগে রত্না আমার ছেলেকে ফুঁসলিয়ে যশোর নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাড়িতে নিয়ে অপারেশন করে পুরুষাঙ্গ কেটে দেয়। এরপর সেই বাড়িতে তাকে আটকে রেখে চিকিৎসা করাতে থাকে। পরে আমরা খবর পেয়ে হিজড়াদের কাছ থেকে উদ্ধার করে তাকে কালীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।"
তিনি আরোও বলেন, তারা হিজড়া সরদারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি।
ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম বলেন, "আমি ও কাজল হিজড়াদের সঙ্গে চলাফেরা করতাম। কিন্তু ঈদের আগে আমাদের কিছু না জানিয়ে হিজড়া সরদার রত্না একটি মাইক্রোবাসে করে যশোরের কোনও একটা বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে অজ্ঞান করে। পরে আমাদের পুরুষাঙ্গ কাটার পর মাগুরায় নিয়ে যায়। সেখানে নাক ও কান ছিদ্র করে হাতে চুড়ি পরিয়ে দেয়।"
অস্ত্রোপচারের শিকার হওয়া আরেক যুবক কাজলের ভাষ্য, "আমাদের না জানিয়ে কৌশলে অজ্ঞান করে এই অপারেশন করা হয়েছে। আমি হিজড়া সরদার রত্নার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।"
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সুলতান আহমেদ বলেন, "ভুক্তভোগী দুই যুবককে কমপক্ষে ১০-১২ দিন আগে অপারেশন করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া তাদের নাক ও কান ফুটানো হয়েছে। ওই দুই ভুক্তভোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ।"
এ ব্যাপারে হিজড়া সরদার মনিরা ওরফে রত্না বলেন, "আমি এসব কাজে জড়িত নই। আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হিজড়াদের অন্য একটি গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে এমন সংবাদ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে।"
এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান খান বলেন, "এ ধরনের কোনও অভিযোগ তার কাছে কেউ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"