উৎসুখ জনতার ভিড়, পানির সংকটের কারণে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ছিল, অতিরিক্ত ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সেখানে ব্যবহার হয়ে আসছিল। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নাশকতা নাকি শর্টসার্কিট তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করার কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেনটেইন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এর আগে ভোর পৌনে ৪টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। তবে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই মার্কেটের চার ভাগের তিন ভাগে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই আগুনটি যেন মার্কেট থেকে ছড়িয়ে আশপাশের ভবনে যেন ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে নজরে রেখে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের বেশ সময় লেগে যায়।”
তিনি বলেন, “দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা ওয়াসাসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পানি সরবরাহের বিষয়টি নিশ্চিত করি।”
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, “মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা ছিল। অতিরিক্ত ভোল্টেজের বিদ্যুৎ সেখানে ব্যবহার হয়ে আসছিল। অতিরিক্ত বিদ্যুতের কারণে তার লোড না নেওয়ায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের সৃষ্টি হয়েছে, নাকি কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।”
নিয়ন্ত্রণ কাজের অন্যান্য সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, “আগুন নিয়ন্ত্রণে উৎসুখ জনতার ভিড় অনেকটাই কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। অনেকেই সহায়তা করতে চান, তবে এটা আমাদের কাছে সমস্যা মনে হয়।”
বৃহস্পতিবার ভোরে কৃষি মার্কেটে লাগা আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট কাজ করে। এছাড়া আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সেনাবাহিনী ছাড়াও উদ্ধার কাজে সহায়তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ, বিজিবি ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা কাজ করে। আগুনের সূত্রাপাত নিয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।
মোহাম্মদপুরের প্রধান এই কাঁচা বাজারটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬০০টি। যার মধ্যে কাপড়ের দোকান, মুদি পণ্যের দোকান, জুতা, জুয়েলারি, বেকারি, প্লাস্টিক পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের দোকান রয়েছে। এর বাইরে সবজি বাজার, মাছ ও মাংসের বাজার রয়েছে।
আগুনে মার্কেটের ১৮টি স্বর্ণের দোকান পুড়ে ছাই হয়। তবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। হতাহতের কোনো খবরও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।