বরগুনার বামনা উপজেলায় 'দৈনিক আমাদের সময়' পত্রিকার বামনা প্রতিনিধি ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান টিপুকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লার বিরুদ্ধে।
আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে বামনা উপজেলা শহরের সদর রোডে এ হামলা চালানো হয়।
হেমায়েত একই উপজেলার পূর্ব সফিপুর গ্রামের মৃত আ. রহিম মোল্লার ছেলে ও বরগুনার স্পিডবোটচালক মো. জব্বার খান হত্যা মামলার আসামি।
হামলায় আহত সাংবাদিক মিজানুর রহমান টিপুকে তাৎক্ষণিক বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি কর্তব্যরত চিকিৎসক বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
মিজানুর রহমান টিপু জানান, ২০১৪ সালের ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) অফিসের স্পিডবোটচালক মো. জব্বার খানকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার খবর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়।
পরে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তদন্ত করে। তাদের তদন্তে আরও ১২ আসামির নাম আসে। পুলিশ ওই ১২ আসামির নাম চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে।
এদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগ সহসভাপতি হেমায়েত হোসেন মোল্লা ৮ নম্বর আসামি ছিলেন। চার্জশিটে নাম ওঠার পরে সব আসামি গা ঢাকা দেয়। ১০ জুন ২০১৭ সালে হেমায়েত হোসেন মোল্লা স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সঙ্গে বামনা আসমাতুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে ঢাকা থেকে বামনা ও পাথরঘাটায় যান।
টিপু আরও জানান, ঘটনায় পরের দিন 'দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকা'র প্রথম পাতায় 'খুনের আসামিকে নিয়ে সাংসদের ইফতার' শিরোনামে সংবাদ ছাপা হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের জেরে তাকেসহ অনেক সাংবাদিককে হুমকি দেন হেমায়েত।
ঘটনার দিন রোববার দুপুর ১টার দিকে তাকে ফোন করে হেমায়েত মোল্লার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যেতে বলা হয়। তিনি সেখানে গেলে আচমকা তার ওপর হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে তাকে বাজারের সড়কে ফেলে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় এক ব্যবসায়ী মো. শাহিন আকন বাঁধা দিতে গিয়ে আহত হন।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিক ও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হেমায়েত হোসেন মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দুজনের কেউই ফোন রিসিভ করেননি।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বামনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলাল জানান, এভাবে চলতে থাকলে সাংবাদিকরা কখনো সত্য সংবাদ প্রকাশ করতে পারবেন না। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বামনা সাংবাদিকরা কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিএম শাহনেওয়াজ বলেন, 'বিষয়টি আমরা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'