নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের চর নঙ্গোলিয়া গ্রামের নিজ বাড়ী থেকে নিখোঁজের প্রায় ৪ মাস পর ক্ষতবিক্ষত ও মূমুর্ষ অবস্থায় রাহেনা আক্তার (১৪) নামের এক কিশোরীকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহ সুমন নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার মূলহোতারা এখনো পলাতক রয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শহর মাইজদী থেকে সুমন ও সাহাবুদ্দিন নামে ২ যুবককে আটক করা হয়েছে। এরআগে বিকালে ওই কিশোরীকে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকজন।
উদ্ধারকৃত রাহেনা আক্তার চর নঙ্গেলিয়া গ্রামের এনায়েত উল্যার মেয়ে। ভুক্তভোগীর মা সামছুন নাহার অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৪মাস আগে তিনি বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে তাদের প্রতিবেশী স্থানীয় জামাল উদ্দিন প্রকাশ জামাইল্লা চোরার মেয়ে রিনা আক্তার বাড়ীতে এসে, নেশা দ্রব্য খাইয়ে রাহেনাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি সম্পর্কে রিনাকে জিজ্ঞেস করলে সে ঘটনা অস্বীকার করে।
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, নিখোঁজের কয়েকদিন পর রাহেনা একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে তাকে কল দিয়ে বলে, ‘মা আমি রাহেনা’ একথা বলার পরই কল কেটে যায়। এরপর থেকে তারা রাহেনার আর কোন সন্ধান পাননি। রবিবার গভীর রাতে পুনঃরায় একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে তাঁর কাছে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি কল দিয়ে রাহেনার বিষয়টি অবগত করলে, রাতে তারা চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের নিচ থেকে মূমুর্ষ অবস্থায় রাহেনাকে উদ্ধার করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাহেনা বলেন, ‘গত ৪ মাস রিনার মামী আলেয়া আক্তার তার মাইজদী বাসায় রেখে তাকে মারধর করে। কখনো ব্লেড দিয়ে পুরো শরীরে ক্ষত করা হয়েছে, কখনো গরম পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে, কখনো শরীরে এসিড দিয়ে পুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ রবিবার রাতে একটি গাড়ী করে তাকে কালুরঘাট ব্রিজের কাছে নিয়ে লাথি দিয়ে ফেলে আসে।’
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমকে দেখে এসেছেন। প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে সুমন নামও সাহাবুদ্দিন নামে ২ যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম জানান, পরিবারের তথ্যমতে তার শরীরে এসিড বা ক্যামিকেল জাতীয় দ্রব্য নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত রয়েছে। তাই হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাহেনাকে সম্ভব হলে ঢাকা বা কুমিল্লায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।