বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে ২৯ বছর ক্ষমতার বাইরে ছিল আওয়ামী লীগ। এই সময় যারা দেশের ক্ষমতায় ছিলেন, তারা দেশকে কী দিয়েছেন- জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, “২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কী দিয়েছে? তারা দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করেছে? তারা দেশের কতটুকু উন্নতি করেছে, সেটাই হলো বড় প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে এসেছে, তখনই এ দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার আদর্শ-পদাঙ্ক অনুসরণ আমরা করেছি। তার আদর্শ নিয়ে আমরা কাজ করেছি।”
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০১ সালে সরকারে আসতে পারিনি, সেটা আমি বহুবার বলেছি। কারণ আমাদের গ্যাস অন্য দেশ কিনবে; আমি রাজি হইনি। খেসারত দিতে হয়েছে, ক্ষমতায় আসতে পারিনি। জনগণের ভোট পেয়েছিলাম কিন্তু চক্রান্তের শিকার হয়েছিলাম। তার পরে দেশটার অবস্থা কী হয়েছিল? বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি- অপশাসনের কারণে এ দেশে ইমার্জেন্সি ঘোষণা হয়। তার আসে আর্মি ব্যাকড তত্ত্বাবধায়ক সরকার।”
তিনি বলেন, “সেই সময়টার কথা একবার চিন্তা করে দেখেন মানুষের কী দুরাবস্থা ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য করার কোনো সুযোগ ছিল না। বিএনপির আমল থেকে যে অত্যাচার নির্যাতন শুরু হয়েছিল এ দেশের মানুষের ওপর, তারই ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। যা হোক একটা পর্যায়ে ২০০৮ সালে তারা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, “এখন তারা (বিএনপি) নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন; নানা কথা বলে। সেটা নিয়ে আমি এখন সমালোচনা করতে চাই না কারণ অনেকগুলো ভালো কাজ করেছি ভালো কথাগুলো বলে যেতে চাই কিন্তু এদের কথা এবং এদের কাজ সবই ধ্বংসাত্মক। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে আমি সতর্ক করতে চাই। আজকে এই উন্নয়নগুলো ধ্বংস করুক সেটা আমরা চাই না।”
বিএনপি-জামায়াত জোটের “অগ্নি সন্ত্রাসের” সময় ক্ষতিগ্রস্ত ৩,৮০০ জনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার তথ্য জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেন এই ধরনের অগ্নি সন্ত্রাস বা এই ধরনের ঘটনা আর না আসে। তখন তারা এগুলো করেছে। এখন তারা আন্দোলন করছে ঠিক আছে, যদি দেখি এখনো তারা চেষ্টা করে বাসে আগুন দিতে, গাড়িতে আগুন দিতে- আমি বলে দিয়েছি, এই আগুন যারা দিতে যাবে; এখন সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তায় যারা থাকবে বা গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে বলেছি, সবার ক্যামেরা অন থাকবে, যদি কেউ এ রকম করতে চায় সঙ্গে সঙ্গে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাই নেবে। যেন মানুষের ক্ষতি করতে না পারে। আবার ওই অগ্নি সন্ত্রাসে যেতে পারে। আন্দোলন করুক আমার আপত্তি নাই।”
তিনি বলেন, “আমরা তো সারা জীবন আন্দোলন করে তারপর ক্ষমতায় এসেছি। তারা (বিএনপি) যেতে চাচ্ছে কিন্তু এই ধরনের মানুষের ক্ষতি করা, এটা যেন করতে না পারে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি, আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন। বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। মানুষ খুন করার দল। তারা প্রতিদিনই আমাদের পদত্যাগ চায় আর বলে আন্দোলন করে হটিয়ে দেবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “ঠিক আছে, তারা তাদের আন্দোলন করতে থাকুক। আমার আছে জনগণ, আমার তো আর কিছু নেই! বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি, হারাবারও কিছু নাই কিন্তু আমার একটাই লক্ষ্য দেশের মানুষের কল্যাণ করা। মানুষের মঙ্গল করা, সেটাই আমরা করে যাচ্ছি।”