দেশের ৩২,৪০৭টি মন্দির ও মণ্ডপে দেবীর আরাধনা ও বিশ্বশান্তি কামনার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকালে ঢাকের বাদ্য আর শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবীর আগমনী বার্তা জানান দেওয়া হয় মন্দিরে-মণ্ডপে।
ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, গুলশান- বনানী সার্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ মণ্ডপ, পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার ও তাঁতীবাজারে মহাসমারোহে ও ব্যাপক আয়োজনে দুর্গা পূজার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানান, গত বছরের চেয়ে এবার দেশে মোট পূজামণ্ডপ বেড়েছে ২৩৯টি। আর ঢাকায় চারটি বেড়ে এবার ২৪১টি মণ্ডপে পূজা উদযাপনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন “কন্যারূপে” ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা; বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই “আগমন ও প্রস্থানের” মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।
পূজা ঘিরে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যেন কোনোরকম সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো নিরাপত্তা শঙ্কা নেই; নির্বাচনী বছর হওয়ায় বাড়তি সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। সেভাবেই নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান এই ধর্মীয় উৎসবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি এক বাণীতে বলেন, “দুর্গাপূজার সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। আবহমানকাল ধরে এদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রায়। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে ঋদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। বিশ্বে মানুষ ও মানবতার জয় হোক- এ প্রত্যাশা করি।”
প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, “দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এটি এখন সর্বজনীন উৎসব। অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।”