অনুমতি না থাকা স্বত্বেও অস্ত্রোপচার করাসহ নানা অভিযোগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে একটি ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একাধিক অভিযোগ থাকলেও ‘মানবিক বিবেচনায়’ মালিককে কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি বলে জানান সিভিল সার্জন।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) উপজেলার নিরাময় নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
তথ্য বলছে, গত ১৫ ডিসেম্বর এক প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুর ২টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ক্লিনিকের মালিক ডা. আসলামুজ্জামান তার অস্ত্রোপচার করেন। ১৫ মিনিট পর নবজাতককে জীবিত বের করা হয়। আর প্রায় দেড় ঘণ্টা পর অচেতন অবস্থায় প্রসূতিকে কেবিনে আনা হয়। তবে দীর্ঘ সময়েও তার জ্ঞান না ফেরায় স্বজনদের সন্দেহ হলে তারা জানতে পারেন ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সেদিন রাতেই মৃতের স্বজনদের দুই লাখ টাকা দিয়ে বিষয়টি আপোষ-মীমাংসা করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর জেরেই সেখানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ জানান, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা জানতে পেরে হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। যথাযথ কাগজপত্র না থাকা ও সেবার নামে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ভোক্তা সংরক্ষণ আইনে কর্তৃপক্ষকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, “হাসপাতাল পরিদর্শন করে দেখা যায় সেটির মালিক আসলামুজ্জামান কামাল নিজেই অজ্ঞান ও অস্ত্রোপচার করতেন। তবে তার এ ধরনের অস্ত্রোপচার করার এখতিয়ারের কোনো কাগজ তিনি দেখাতে পারেননি। বিষয়টি প্রতারণার শামিল। মানবিক বিবেচনায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়নি। তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
“একই দিনে একই এলাকার জাহানারা সেবা ক্লিনিক নামে আরেক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সেখানে ডিউটি চিকিৎসক অনুপস্থিত, পর্যাপ্ত নার্স না থাকা ও ভুয়া চিকিৎসক নিয়োগ করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এই অভিযোগে এটির কর্তৃপক্ষকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়,” যোগ করেন তিনি।
অভিযানে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান, আরএমও আমিনুল ইসলাম, সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার এস. এম সাকিবুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।