দেশের অনেক নাগরিকই হয়ত “পোস্টাল ব্যালট” বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত নন। কিন্তু দেশব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে নির্দিষ্ট ধরনের কিছু ভোটার পোস্টাল সার্ভিস ব্যবহার করে ভোট দিতে পারেন।
পোস্টাল ব্যালট হলো এমন একটি রাষ্ট্রীয় সুবিধা যেখানে প্রযোজ্য ব্যক্তিরা ডাক সেবার মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন। এই সেবার আওতায় আছেন রাষ্ট্রপ্রধানসহ কয়েকটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষ। নির্বাচনে সর্বস্তরের জনগণের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করাই এই সেবার লক্ষ্য।
বুধবার রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও তার স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে।
পোস্টাল ব্যালট কী এবং কীভাবে এর মাধ্যমে ভোট দেওয়া যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে ঢাকা ট্রিবিউনের এই আয়োজনে-
পোস্টাল ব্যালট কী?
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ২৭ ধারায় অনুযায়ী, প্রযোজ্য ভোটাররা ডাক বিভাগের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
এই নিয়মের অন্তর্ভুক্ত নির্দিষ্ট কয়েকটি গোষ্ঠী যেমন- কারাবন্দি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্যক্তি, প্রবাসী বাংলাদেশি, পোলিং অফিসার এবং যারা সশরীরে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারবেন না এমন ব্যক্তি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এমন অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
পোস্টাল ব্যালট কীভাবে ব্যবহার করা হয়?
পোস্টাল ব্যালট ব্যবহার করতে হলে ভোটারকে সংশ্লিষ্ট এলাকার রিটার্নিং অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয়। আবেদনে নাম, ঠিকানা এবং ভোটার তালিকার সিরিয়াল নম্বর উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্নিং অফিসার ওই ভোটারকে একটি ব্যালট পেপার ও খাম পাঠান। পছন্দের মার্কায় ভোট দিয়ে প্রদত্ত খামে ঢুকিয়ে ব্যালট পেপারটি ফেরত পাঠাতে হয়।
ফেরত পাঠানো খামে পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষের সনদ এবং রাবার স্ট্যাম্পের সিল থাকা আবশ্যক। নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখের আগেই পোস্টাল ব্যালট বিতরণ এবং ফেরত আনা হয়।
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার পোস্টাল ভোট গণনা করেন। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরে আসা পোস্টাল ব্যালট গণনায় ধরা হয় না।
নির্বাচন কমিশনের ক্যাম্পেইন
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানকে উৎসাহিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
সম্প্রতি এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় বিদেশে বাংলাদেশ মিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করা হয়। এই পদক্ষেপের ইতিবাচক উদাহরণ রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান।
মার্কিন নির্বাচনে পোস্টাল ভোট
২০২০ মার্কিন নির্বাচনে পোস্টাল ভোটিংয়ের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেবার কোভিড মহামারির কারণে অনেক ভোটারই কেন্দ্রে যেতে পারেননি। ওই নির্বাচনে প্রায় সাড়ে ছয় কোটি মার্কিন ভোটার পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতিতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
২০১৬ সালেও প্রায় তিন কোটি মার্কিন ভোটার এই পদ্ধতিতে ভোট দেন। যা ছিল তৎকালীন ভোটারের প্রায় ২৫%।