Wednesday, March 19, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

অনুমোদন পেল প্রোটিনসমৃদ্ধ নতুন দুই ধানের জাত

  • নতুন দুটি জাত কৃষকেরা চাষাবাদ করে লাভবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে
  • ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধানের জাতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৫টি
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২১ এএম

নতুন উদ্ভাবিত দুই জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। এ দুটি জাতের নাম ব্রি ধান ১০৭ ও ব্রি ধান ১০৮। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় নতুন এ দুটি জাতের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর ফলে ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধানের জাতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১৫টি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ব্র ‘র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন দুটি জাত কৃষকেরা চাষাবাদ করে লাভবান হবে বলে আশা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর জানান, নতুন উদ্ভাবিত জাত ব্রি ধান ১০৭, প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সম্পন্ন উফশী বালাম জাতের বোরো ধান। এ জাতটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক ২০১৫ সালে কৃষকের মাঠ থেকে সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ লাইন বাছাইকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। ব্রি গাজীপুরের গবেষণা মাঠে নির্বাচিত কৌলিক সারিটি ৩ বছর সফল ফলন পরীক্ষণের পর ২০১৯ সালে ব্রি’র আঞ্চলিক কার্যালয় সমূহের গবেষণা মাঠে ও ২০২০ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। ২০২২ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় (পিভিটি) সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দলের সুপারিশের ভিত্তিতে জাতটি  ছাড়করণের জন্য আবেদন করা হয়।

তিনি জানান, ব্রি ধান-১০৭ এর পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৩ সেন্টিমিটার। ব্রি ধান-১০৭ এর গড় জীবনকাল ১৪৩ দিন যা ব্রি ধান-৫০ এর সমান। এর ডিগ পাতা প্রশস্ত, খাড়া ও লম্বা এবং পাতার রং সবুজ। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৮.১৯ টন, তবে এটি অনুকূল পরিবেশে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরপ্রতি ৯.৫৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। এ ধানের গুণগতমান ভালো। এ ধানের চালে অ্যামাইলেজ এবং প্রোটিনের পরিমাণ যথাক্রমে ২৯.১ ভাগ এবং ১০.২। এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন ২৬.১ গ্রাম। এ ধানের দানার রং খড়ের মতো। উচ্চফলনশীল, অতি চিকন চাল ও ভাত ঝরঝরে হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ এ জাতটি চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহী হবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

মহাপরিচালক জানান, ব্রি ধান-১০৮ জাতটিও বোরো মৌসুমে সারাদেশে চাষের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ধানের প্রতিটি ছড়ায় অধিক সংখ্যক ধান (২৫০-২৭০টি) সন্নিবেশিত থাকে। জাতটির গবেষণা কার্যক্রম ব্রিতে ২০১২ সালে শুরু হয়। গাজীপুর এবং ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়ের গবেষণা মাঠে এর চাষাবাদ করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের মাঠে নানা পরিবেশে দীর্ঘ সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণ-পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় সারাদেশে চাষাবাদের জন্য জাতটি অবমুক্ত করার অনুমোদন নেওয়া হয়।

ব্রি ধান ১০৮–এর পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০২ সেন্টিমিটার, এর ডিগ পাতা খাঁড়া ও গাঢ় সবুজ। সেই সঙ্গে হেলে পড়াসহিষ্ণু এবং জীবনকাল ১৪৯-১৫১ দিন। এই জাতের গ্রেইন টাইপ (শস্যদানা) জিরা ধানের মতো। জাতটি কৃষকদের ভালো বাজার মূল্য পাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে উদ্ভাবন করা হয়েছে। ব্রি ধান ১০৮–এ উচ্চফলন ও ফাইন গ্রেইনের সমন্বয় করা হয়েছে। এ জাতের হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৮.৭ টন, যা ব্রি ধান ১০০ জাতের চেয়ে ১.০ থেকে ১.৫ টন বেশি। এই জাতের এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ১৬.৩ গ্রাম। চাল মাঝারি, লম্বা ও চিকন, যা জিরা চালের অনুরূপ। ভাত হবে ঝরঝরে, রং সাদা। এটাতেও প্রোটিনের মাত্রা অন্যান্য ধান থেকে ৮.৮% বেশি।

   

About

Popular Links

x