বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।
উদ্বোধন শেষে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সামনে থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। আনন্দ শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক , উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার প্রমুখ।
এ ছাড়া দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে স্মৃতিচারণ, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ও হ্যান্ডবল ম্যাচ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে জহির রায়হান মিলনায়তনে চারুকলা বিভাগের আয়োজনে চিত্র প্রদর্শনী এবং কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়।
১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট তৎকালীন সরকার এক অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার পূর্ব নাম জাহাঙ্গীরনগরের সঙ্গে মিলিয়ে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে। এরপর ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আহসান বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট পাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় রাখা হয়।
১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি ১৫০ জন ছাত্র ও চারটি মাত্র বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। রাজধানীর অদূরে সাভারের নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ৩৪টি বিভাগ ও চারটি ইনস্টিটিউট রয়েছে। এসব বিভাগে বর্তমানে সাড়ে সাত শতাধিক শিক্ষক ও প্রায় আঠারো হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়াও পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য রয়েছে ২২ টি আবাসিক হল।
দেশের সবচেয়ে উঁচু শহীদ মিনার, মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য “সংশপ্তক”, ভাষা আন্দোলনের স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য “অমর একুশে”, নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের নামে দৃষ্টিনন্দন “মুক্তমঞ্চ” বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সুদীর্ঘ গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জানান দেয়।
এর পাশাপাশি শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিভিন্ন সময়ে এখানে পাঠদান করেছেন দেশের খ্যাতনামা শিক্ষক, গবেষক, অর্থনীতিবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, খেলোয়াড়সহ দেশবরেণ্য ব্যক্তিরা। এছাড়াও “সাংস্কৃতিক রাজধানী” হিসেবে খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিনিয়তই দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রাখছে বিশেষ অবদান।