বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় সড়ক থেকে মনজুরুল ইসলাম (৫৬) নামের এক সাংবাদিকের দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি দৈনিক ভোরের কাগজ–এর উপজেলা প্রতিনিধি।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার দিকে নওগাঁ-বগুড়া সড়কের মুরইল বাজার এলাকার জয় ফিলিং স্টেশনের পূর্ব পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাংবাদিক মনজুরুল ইসলাম আদমদীঘি উপজেলার উজ্জলতা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
মনজুরুলের ভাই মোশাররফ হোসেন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আমার ভাইয়ের মৃত্যু রহস্যজনক। সে সড়ক দুর্ঘটনায় নাকি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে নিহত হয়েছে, সে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”
আদমদীঘি প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজার রহমান, “সড়ক দুর্ঘটনায় এভাবে শরীর দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সুযোগ কম। ট্রেনে কেটে খণ্ডিত হয়ে মারা যাওয়ার মত লাগছে। মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে।”
সাংবাদিক মনজুরুলের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আদমদীঘি উপজেলার সব সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এটি হত্যাকাণ্ড না সড়ক দুর্ঘটনা তা বের করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানান, নিহত মনজুরুল ইসলাম আদমদীঘি প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বুধবার রাত ১০টা পর্যন্ত গ্রামে একটি ক্লাবের অনুষ্ঠানে ছিলেন। সেখানে রাতের খাবার খেয়ে মোটরসাইকেলে করে তার এক আত্মীয়কে দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে রেখে বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয় লোকজন সড়কের ওপর মনজুরুলের দ্বিখণ্ডিত লাশ দেখতে পেয়ে রাত ১১টার দিকে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দল তার দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। তার মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে পড়ে ছিল।
আদমদীঘি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, ধারণা করা হচ্ছে বাস বা ট্রাকের ধাক্কায় সাংবাদিক মনজুরুল মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় পড়ে যান। এরপর ওই যানের চাকা পেটের ওপর দিয়ে অনেক দূর ছেঁচড়ে যাওয়ায় শরীর দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এরপরও সন্দেহ থাকায় বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। পরিবার থেকে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”