Monday, March 17, 2025

সেকশন

English
Dhaka Tribune

চট্টগ্রাম বন্দরে বসল রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানার

স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ঠেকানো যাবে অসাধু ব্যবসায়ীদের মিথ্যা ঘোষণা, ওভার বা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি, মানিলন্ডারিং ও রফতানি প্রণোদনা আত্মসাতের মতো কার্যক্রম

আপডেট : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৫৬ এএম

দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের প্রায় ৯২% চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। এই বন্দরের নিরাপত্তা ও আধুনিকায়নে প্রতিনিয়ত সংযোজিত হচ্ছে নতুন নতুন টেকনোলজি। এরই ধারাবাহিকতায় কনটেইনার পরীক্ষার জন্য এবার যুক্ত হয়েছে দুই সেট স্ক্যানার মেশিন। এসব স্ক্যানারের সাহায্যে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০টি রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানিং করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্মকর্তারা।

শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে রপ্তানি পণ্য ভর্তি কনটেইনার স্ক্যানিং। এ দিন রপ্তানিমুখী পণ্যবাহী কনটেইনার স্ক্যানারের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

এতদিন আমদানি করা পণ্যভর্তি কনটেইনার জাহাজ থেকে নামানোর পর স্ক্যান করা হতো। এরপর নানা প্রক্রিয়া শেষে সেসব পণ্যভর্তি কনটেইনার ছাড় পেতো। তবে চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানি পণ্য স্ক্যান করার সুযোগ ছিল না। স্ক্যান ছাড়াই পণ্যভর্তি কনটেইনার জাহাজে তোলা হতো।

চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্ক্যানার বসানোর মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল শিপ অ্যান্ড পোর্ট ফ্যাসিলিটি সিকিউরিটি (আইএসপিএস) কোডের শর্ত পালনে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে চট্টগ্রাম বন্দর। রপ্তানি পণ্য স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে ঠেকানো যাবে অসাধু ব্যবসায়ীদের মিথ্যা ঘোষণা, ওভার বা আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি, মানিলন্ডারিং ও রফতানি প্রণোদনা আত্মসাতের মতো কার্যক্রম।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য গেট আছে মোট ১২টি। এরমধ্যে তিনটি গেট রপ্তানিমুখী পণ্যের জন্য, বাকি নয়টি গেট আমদানি করা পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য ব্যবহার হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে আমদানি গেট দিয়ে রপ্তানি পণ্য এবং রপ্তানি গেট দিয়ে আমদানি পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০২১ সালে একনেক সভায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে দুটি স্ক্যানার ক্রয় প্রকল্পের ডিপিপি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ২০২২ সালে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৮৯ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। পরবর্তীতে স্ক্যানার দুটি ৮৫ কোটি ৮৯ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকায় কেনার চুক্তি হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, স্ক্যানার বসানোর ফলে ব্যক্তি কর্তৃক প্রচলিত কার্গো পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বাণিজ্যিক ব্যয় হ্রাসকরণ এবং মাল্টি এজেন্সি অর্থাৎ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কর্তৃক মনিটরিং করা যাবে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল মোস্তফা আরিফ উর রহমান খান অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের মতো রপ্তানিমুখী কনটেইনার পরীক্ষার জন্য দুটি অত্যাধুনিক স্ক্যানার বসানো হয়েছে। একটি স্ক্যানারে ঘণ্টায় ১৫০টি কনটেইনার স্ক্যান করা সম্ভব। বন্দরের তিনটি রপ্তানিমুখী গেটের মধ্যে জিসিবি-৪ এবং সিপিএআর গেটে এ দুই সেট স্ক্যানার বসানো হয়েছে। এখনও সিসিটি-২ নম্বর গেটে স্ক্যানার নেই। অদূর ভবিষ্যতে এ গেটেও স্ক্যানার বসানো হবে।”

তিনি বলেন, “বৈধ ঘোষণা দিয়ে অবৈধ পণ্য রপ্তানি হচ্ছে কি-না, সাধারণ পণ্যের ঘোষণা দিয়ে রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে কি-না, এক কোটি টাকার পণ্য ঘোষণা দিয়ে দুই কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হচ্ছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যাবে এসব স্ক্যানারের মাধ্যমে।”

স্ক্যানার দুটি উদ্বোধন করে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের নিরাপত্তা বহরে যুক্ত হওয়া রপ্তানিমুখী কনটেইনার স্ক্যানার পণ্যের জাহাজীকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। বন্দরে কনটেইনার জট হ্রাস করবে। অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্যের রপ্তানি নিবৃত্ত করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বন্দর নিরাপত্তা সংস্থা এবং রপ্তানি সহযোগী দেশের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ও কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালনে সহায়তা করবে।”

   

About

Popular Links

x