জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে অন্য গ্রাফিতি অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম।
অনশনের তৃতীয় দিনে তার দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত শিক্ষকদের সংগঠন “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ”।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহীসহ অন্যান্য সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ সময় অধ্যাপক ড. মোতাহার হোসেন বলেন, “এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার পর আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস করি তারা মেনে নিতে পারিনি। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছি। অনশনরত ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে আমরা একমত প্রকাশ করে দোষীদের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি দুই রাতে গ্রাফিতি আঁকার কাজ হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একেবারে সদর দরজায় সারা রাত কাজ হলো। এখানে কেউই দেখতে পেল না? নাকি এখানে অন্য কিছু আছে? ”
অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “যেখানে জাতির পিতাকে অবমাননা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে অসম্মান করা হয়েছে সেখানে তারা বিচারে শৈথিল্য দেখিয়েছে। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক। উনি কেন এ বিষয়টিকে এত হালকাভাবে নিলেন? এ অবমাননাকে তিনি মোটেই গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়টি আমাদের আহত করেছে। এখানে কারা গ্রাফিতি এঁকেছে এটা তো স্পষ্ট। এর পেছনে কুশীলব কারা; দায়ী কারা আর কারা শৈথিল্য দেখিয়েছে এটা খুঁজে বের করা দরকার।”
অনশনরত ছাত্রলীগ নেতা এনাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের লেবাসধারী অনেক শিক্ষক আছে। তারা মুখোশ ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অবমাননা করে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যারা ব্যবসা করে তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের বেদিতে আমরণ অনশন শুরু করেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এনামুল হক এনাম। তার উত্থাপিত তিন দফা দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে করা, ৮ দিন পার হলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা তদন্ত করা।
প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে জাবি ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এ গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। গ্রাফিতিতে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। এর পাশেই লেখা হয় “ধর্ষণ ও স্বৈরাচার থেকে আজাদী”। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি মুছে ফেলার প্রতিবাদে আমরণ অনশন শুরু করেন এনামুল হক এনাম।