মাইকে ডেকে লোক জড়ো করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বেলা ৩টার দিকে রেলক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবারের সংঘর্ষের ঘটনার জেরে এ হামলা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
হামলার প্রতিবাদে বিকেল ৪টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক আটকে বিক্ষোভ করেন শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) নামে পরিচিত। এছাড়া নিজেদের শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেয়। এর নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবীর সাদাফ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের বরাত দিয়ে অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে ছাত্রলীগের উপপক্ষ বিজয় ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রসহ চারজন আহত হয়েছিলেন। যে কর্মচারীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল, তার নাম বখতিয়ার উদ্দিন। তিনি স্থানীয় ফতেপুর ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে বিচারের দাবি করছিলেন বখতিয়ারের অনুসারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
এর জেরে শুক্রবার জুমার নামাজের পর মাইক দিয়ে ডেকে স্থানীয় লোকদের জড়ো করেন বখতিয়ারের অনুসারীরা। এ সময় তারা চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সড়ক অবরোধ করেন তারা। বিকেল ৩টার দিকে রেলক্রসিং এলাকায় অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন স্থানীয় লোকজন।
যেসব শিক্ষার্থী স্থানীয়দের হামলায় আহত হয়েছেন, এর মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তরের মাইশা তাসনীম ও শাহাদাত হোসেন।
আহত শাহাদাত হোসেন বলেন, “বিকেল সাড়ে ৫টায় ট্রেনে মাইশার ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। তাই তাকে এগিয়ে দিতে যাচ্ছিলাম। ৩টার দিকে গোলচত্বর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠি। অটোরিকশাটি রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে স্থানীয় লোকজন পথ আটকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। মাইশার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেছেন। মাথার চুলও কিছুটা পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।”
ছাত্রলীগের যে পক্ষটি বিক্ষোভ করছে তাদের দাবি, এ ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।
শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা খবীর সাদাফ এ বিষয়ে বলেন, “আগেও বিভিন্ন সময় স্থানীয় বাসিন্দারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসব ঘটনায় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এ কারণে বারবার হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নুরুল আজিম শিকদার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, “যেকোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা আমাদের জন্য লজ্জাকর। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।”