জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় মামলার গ্রেপ্তার প্রধান আসামি সহপাঠী রায়হান সিদ্দিক ওরফে আম্মানের জামিন নামঞ্জুর করেছেন কুমিল্লার একটি আদালত।
রবিবার (২৪ মার্চ) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু বকর সিদ্দিক তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
রায়হান সিদ্দিককে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা শহরের বাগিচাগাঁও ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় নিজ বাসা থেকে জবির আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার লাশ উদ্ধার করা হয়।
পর দিন সকালে আম্মানকে বহিষ্কার ও দ্বীন ইসলামকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সাময়িক বরখাস্ত হন দ্বীন ইসলাম।
এদিন রাতে আম্মান ও দ্বীনকে আসামি করে কুমিল্লা কোতয়ালি থানায় মামলা করেন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এতে দুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। রাতেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
রবিবার রাতে কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে দুইজনকে কুমিল্লায় নিয়ে আসেন। সোমবার তাদের আদালতে তোলা হলে জামিনের আবেদন নাকচ করে আম্মানের দুদিনের ও দ্বীন ইসলামের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এরপর ২০ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সহকারী প্রক্টর ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামের জামিন নামঞ্জুর করেন একই আদালত।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে কুমিল্লার ১ নম্বর আমলি আদালতে অবন্তিকাকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার প্রধান আসামি রায়হান সিদ্দিকের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো আবু তাহের। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন।
অবন্তিকার আইনজীবী সৈয়দ নুরুর রহমান বলেন, এ মামলার মূল অপরাধী আম্মান। তার জামিন হতে পারে না। আম্মানের কারণে অবন্তিকা আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সুতরাং আম্মানকে জামিন দিলে ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ হওয়ার শঙ্কা আছে।
মৃত্যুর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নিজের এমন মৃত্যুর জন্য সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন অবন্তিকা। আম্মান তাকে অনলাইন ও অফলাইনে হুমকি দিতেন। এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টরকে অভিযোগ দেওয়ার পর তিনিও হুমকি-ধমকি দিয়েছেন- আত্মহত্যার আগে এমন অভিযোগের কথা লিখে গেছেন অবন্তিকা।
এ ঘটনায় ১৫ মার্চ রাত থেকেই বিক্ষোভ শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবন্তিকার সহপাঠী ও বিভাগের শিক্ষার্থীরা।